মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগে আশিক ফাউন্ডেশন ফর চাইল্ডহুড ক্যান্সার এর উদ্যোগে শিশুদের উন্নত চিকিৎসেবার পরিবেশ-সহায়ক শিশু কর্নার চালু হলো। গত মঙ্গলবার হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মির্জা কামরুল জাহিদ এর উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আশিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন সালমা চৌধুরী ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আফজাল হোসেন চৌধুরী, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার পরিতোষ কুমার পালিত, শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমা বেগম এবং অন্যান্যরা চিকিৎসকগণ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাসপাতালের ১৩নং ওয়ার্ডে শিশু সার্জারী বিভাগে ফিতা কেটে প ম আশিক প্লে-সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়। এরপর শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের সেমিনার হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে প্লে-সেন্টার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার জন্য ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন সালমা চৌধুরী হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সেপ্টেম্বর মাসটি ‘শিশু ক্যান্সার বিষয়ক সচেতনতার মাস’ হিসাবে উদযাপন করা হয়। ‘প্লে-থেরাপি’ শিশুদের চিকিৎসারই একটি বিশেষ অঙ্গ। প্লে-সেন্টারে খেলাধুলা ও বিনোদনের মধ্যে শিশুরা ব্যথা-বেদনা ভুলে থাকতে পারে। এতে শিশুর মন থেকে চিকিৎসাজনিত ও হাসপাতালের ভয়-ভীতিও দূর হয়ে যায়।
ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আফজাল হোসেন চৌধুরী বলেন, আশিকের ক্ষুদ্র উদ্যোগ বাস্তবায়নে আপনারা যে বৃহৎ সহযোগিতা দেখিয়েছেন, সেজন্য আমরা আপনাদের কাছে গভীর কৃতজ্ঞ। আশিক ফাউন্ডেশন ফর চাইল্ডহুড ক্যান্সার ১৯৯৪ সাল থেকে গত ২৭ বছর ধরে শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে আশিক শেল্টার, আশিক প্যঅলিয়েটিভ কেয়ার উইনিট (পিসিইউ), সার্পোট-এ-লাইফ, আশিক প্লে-সেন্টার এবং আশিক পেশেন্ট সার্ভিস অন্যতম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসক ও অন্যান্য বক্তারা জানান, আশিক ফাউন্ডেশনের মতো একটি বেসরকারি উদ্যোগ একটি সরকারি হাসপাতালে যে এই প্লে-সেন্টারের যাত্রা শুরু করল, তা নিঃসন্দেহে এক মহতী উদ্যোগ। এই হাসপাতালে যেসব শিশুরা চিকিৎসা নিতে আসে, তারা সাধারণত জন্মগত ত্রæটি সারানোর লক্ষ্য নিয়েই সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। এদের চিকিৎসা প্রক্রিয়াটি কখনও কখনও দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তারা যাতে মুষড়ে না পড়ে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে উজ্জীবিত থাকতে পারে, সে লক্ষ্যেই এই প্লে-সেন্টার অতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ জাতীয় উদ্যোগ নিয়ে শিশুদের পাশে এসে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে আশিকের এ মানবিক উদ্যোগ বাংলাদেশে অন্যান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সামনে এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
প্রসঙ্গত, আশিক ফাউন্ডেশন ফর চাইল্ডহুড ক্যান্সার বাংলাদেশের প্রথম অলাভজনক দাতব্য প্রতিষ্ঠান, যারা বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঠিক চিকিৎসা সেবা ও উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু বিভাগে চালু হওয়া প্লে-সেন্টারটি আশিক ফাউন্ডেশনের প ম প্লে-সেন্টার। এর আগে ১৯৯৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে, ২০০৩ সালে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে, ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএমইউ) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে আশিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আরো চারটি প্লে সেন্টার চালু করা হয়।