
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান বৌদ্ধ ধর্মগুরু ও দার্শনিক অতীশ দীপঙ্করের নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন চর্চা এবং প্রচারে পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে অতীশ দীপঙ্করের অবদান অনন্য। তিব্বতে তাঁকে ‘অতীশ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যার অর্থ শান্তি। তিনি শুধু একজন ধর্মগুরু নন, বরং শিক্ষক, পণ্ডিত, লেখক, দার্শনিক, বিতার্কিক এবং বাগ্মী হিসেবেও বিশ্বব্যাপী সম্মানিত। বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে তাঁর কর্ম ও দর্শন আমাদের গর্বিত করে তুলেছে। তাই তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশে তাঁর নামে একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়োপযোগী উদ্যোগ হবে।
ধর্মীয় সহনশীলতা ও শান্তির বার্তা
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান কেন্দ্র (বৌদ্ধ বিহার) আয়োজিত কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি আরও বলেন, বুদ্ধের শিক্ষা আমাদের শেখায় মানুষকে মৈত্রীপরায়ণ, ক্ষমাশীল এবং লোভমুক্ত হতে। একে অপরকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের মাধ্যমে সমাজে প্রকৃত মানবিকতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
পঞ্চশীলের শিক্ষা মানবতার ভিত্তি
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের পঞ্চশীল বুদ্ধ প্রদত্ত পাঁচটি মৌলিক নীতি যা মানবতাবাদী ও সার্বজনীন। এসব নীতি চর্চার মাধ্যমে সমাজে অন্যায়, অনাচার, অপরাধ ও দুর্নীতি হ্রাস পাবে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার
উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি জানান, আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থান
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। এখানে ধর্মীয় বিভেদ নেই। তবে দেশের এক শ্রেণির ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবী মাঝে মাঝে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বীরাক্কোদি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ব্যবসায়ী শুভাশীষ চাকমা এবং কর্নেল দিদারুল আলম প্রমুখ।
#অতীশদীপঙ্কর #স্বরাষ্ট্রউপদেষ্টা #বৌদ্ধধর্ম #ধর্মীয়সম্প্রীতি #বাংলাদেশ #বোধিজ্ঞানকেন্দ্র #আন্তর্জাতিকবিশ্ববিদ্যালয় #কঠিনচীবরদান #AtishDipankar #BangladeshNews #ReligiousHarmony
