
বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বক্তারা বলেছেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭ কোটি ৭১ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ খাবার থেকে বঞ্চিত, এবং ২০২৩ সালে প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিল।
এ প্রেক্ষাপটে আজ সকাল ১১টায় বিসেফ ফাউন্ডেশন, ফুড সেফটি অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (WBB) ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে সংস্থার কৈবর্ত সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় “নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিতে সম্মিলিত প্রয়াস” শীর্ষক সেমিনার।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কমিউনিকেশন অফিসার শানজিদা আক্তার এর সঞ্চালনায় এবং সংস্থার পরিচালক গাউস পিয়ারী এর সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিসেফ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রেজাউল করিম সিদ্দিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম (সাধারণ সম্পাদক, সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স), সুমনা রানী দাস (ডেপুটি ডিরেক্টর, প্রশিকা-এগ্রিকালচার), এবং জনাব শাহীদ আলম চৌধুরী (ডেপুটি ম্যানেজার, ইউগ্লেনা গ্যাংকি)।
মূল বক্তব্যের সারসংক্ষেপ
বিসেফ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রেজাউল করিম সিদ্দিক বলেন, “উন্নত খাদ্য মানে শুধু পুষ্টিকর নয়, তা হতে হবে নিরাপদ ও সবার সাধ্যের মধ্যে। খাদ্য অপচয়, অসম বন্টন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গবেষণা, প্রযুক্তি, কৃষক ভর্তুকি, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নীতিনির্ধারণে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে খাদ্য সম্পর্কিত ২৫টি আইন থাকলেও কোনো পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা নেই। মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে খাদ্য ব্যবস্থায় অনিয়ম তৈরি হয়।” তিনি খাদ্যের উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
সুমনা রানী দাস বলেন, “ছাদ কৃষি কার্যক্রম নিরাপদ সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে প্রায় ৬৫০০টি ছাদবাগান রয়েছে, যা শহুরে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে সহায়ক।”
জনাব শাহীদ আলম চৌধুরী বলেন, “শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে পুষ্টি সচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন।”
সভাপতির বক্তব্যে গাউস পিয়ারী বলেন, “খাদ্য শুধু মানবাধিকার নয়, এটি টেকসই উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো দেশ উন্নয়নের সুফল পেতে পারে না।”
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, এইড ফাউন্ডেশন, বারসিক, টোবাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা।
#WorldFoodDay2025 #FoodSecurity #SafeFood #NutritionForAll #BSAFEFoundation #WBBCampaign #FoodSafetyBangladesh #FAO #SustainableDevelopment #ZeroHunger #BangladeshAgriculture
