শনিবার, এপ্রিল ২০Dedicate To Right News
Shadow

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে ‘নোনা জলের কাব্য’

Spread the love

গত বছর বিশ্বজুড়ে সাড়া জাগানোর পরে ‘নোনা জলের কাব্য‘ এবারে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন COP26 এও ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। গতকাল ৮ নভেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় সম্মেলনের ‘অফিসিয়্যাল গ্রীন জোন‘ হিসেবে আখ্যায়িত ‘গ্লাসগো সায়েন্স সেন্টার‘ – এ ৮০ ফিট এর আইম্যাক্স থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে নোনা জলের কাব্য‘র স্ক্রিনিং। সম্মেলনে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও একই শহরে জাতিসংঘের COY16 সম্মেলনে অক্টোবরের ২৯ তারিখ দেখানো হয়েছে- ‘নোনাজলের কাব্য’। ছবিটির পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বর্তমানে এই সম্মেলনে যোগদানের উদ্দ্যেশ্যে গ্লাসগো তে অবস্থান করছেন।

‘নোনা জলের কাব্য‘- আগামী ২৬ নভেম্বর ২০২১ ঢাকায় মুক্তি পাচ্ছে। বাংলাদেশে এ ছবির পরিবেশক ষ্টার সিনেপ্লেক্স। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, এবং তাসনোভা তামান্না। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই এবং তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কার এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। সমাজ, সংস্কৃতির উন্নয়ন এবং পরিবেশের অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন রোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে চলচ্চিত্র তথা বিনোদন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে – এই বিশ্বাস নিয়েই পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত নির্মাণ করেছেন ‘নোনা জলের কাব্য‘।

তিনি বলেন, ‘ছবিটি নির্মাণ করতে আজ থেকে তিন বছর আগে আমি গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ায়। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, উপকূলবর্তী সেই গ্রামটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। মহামারীর কারণে প্রায় ১.৫ বছর আমার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠে নি, কিন্তু এবার যখন পরিচিত সেই জায়গার খোঁজে, প্রিয় সেই মানুষগুলোর খোঁজে গেলাম, গিয়ে দেখি সেখানে কেবলমাত্র কিছু গাছপালা ভেঙে পরে রয়েছে, জোয়ারের পানি উঠবে উঠবে ভাব। জানতে পারলাম এই অঞ্চলে গত ২-৩ বছর যাবৎ সমুদ্রের পানির উচ্চতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। জোয়ারের তীব্রতা তো রয়েছেই, গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান-ও অনেক ক্ষতি করেছে।‘

এসকল প্রতিকূলতা বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে তেমন একটা নেতিবাচক প্রভাব না ফেললেও, হারিয়ে যাচ্ছে অনাদিকাল থেকে চলে আসা এসকল প্রান্তিক জেলেদের উপার্জনের পন্থা। জেলেরা হারিয়ে ফেলছে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকার ক্ষমতা। জীবিকার তাগিদে ধীরে ধীরে তারা পাড়ী জমাতে শুরু করেছে শহরাঞ্চলে।

সুমিত বলেন, ‘নোনাজলের কাব্য’ ছবিতে যে সকল জেলে ভাই বোনেরা অভিনয় করেছিলেন, তাদের কারও কারও সাথে আমার এবার দেখা হয়েছে। তাদের মুখে শুনেছি ইলিশ মাছও নাকি এখন অপ্রতুল। শুনে বুঝলাম তাদের জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা আমার সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে। সংগ্রামী এই মানুষগুলোর গল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা খুব জরুরি, সেই সূত্রেই জাতিসংঘের জলবায়ু কনফারেন্সে আবেদন করা। আয়োজকদের আমি বিশেষ ধন্যবাদ দিতে চাই, কারণ তারা আমার ছবিকে, এবং আমার ছবির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনকে তুলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছেন। ‘নোনাজলের কাব্য’ জলবায়ু পরিবর্তনের সম্মুখ যুদ্ধের এক উপাখ্যান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।‘

ফজলুর রহমান বাবু বলেন, “একটি চমৎকার আবহে, আমরা ‘নোনাজলের কাব্য’ তে কাজ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, সততার এবং নিষ্ঠার সহিত সাথে কাজ করলে, একটা সিনেমা মানসম্মত হয়। আমি সিনেমায় ‘চেয়ারম্যান’ এর ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমাদের সিনেমায় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পী এবং কলাকুশলী কাজ করেছে। আমি আশাবাদী, ‘নোনাজলের কাব্য’ আমাদের দেশের চলচ্চিত্র আঙ্গিনায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি আপামর সিনেমাপ্রেমী দের অনুরোধ করবো, আপনারা সিনেমাহলে আসবেন এবং বড়পর্দায় দেখবেন আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি করা সিনেমা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *