![](https://bn.thestatement24.com/wp-content/uploads/2021/12/Khan-Bahadur-1-1024x652.jpg)
হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফীসাধক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। তিনি একজন ক্ষণজন্মা মানুষ। দেশে শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ও কল্যাণে হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার অবদান অনুসরণীয়। তার প্রচেষ্টায় কুমিল্লাসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে কুমিল্লা টাউন হলের বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনে ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর জীবন-কর্ম ও শিক্ষা-সমাজকল্যাণে অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা সদর আসনের এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এসব কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, খ্যাতনামা চিকিৎসক ও কুমিল্লার চান্দিনা আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।
তিনি বলেন, হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক ও সমাজহিতৈষী ছিলেন। যার অগ্রগামিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তার দর্শনকে প্রায়োগিক রূপ দিতে ১৯৩৫ সালে তিনি আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে দেশ ও দেশের বাইরে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।
ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত আরো বলেন, তিনি চিন্তা ও কর্মে একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন। তিনি সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। অনুষ্ঠানে মূল আলোচক ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, মহামনীষী খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা-এর শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তি বাংলার মুসলিম ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার উন্নতি ও প্রসারের গুরুদায়িত্ব তার ওপর অর্পিত হয়। তারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুল। ১৯২৮ সালে মোছলেম এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল গার্লস কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান প্রশংসনীয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামে মুসলিম হাইস্কুল, ১৯১১ সালে কুমিল্লায় মাধবপুর শেখ হাই স্কুল, ১৯১২ সালে রায়পুর কে. সি হাই স্কুল, ১৯১৬ সালে কুমিল্লার চান্দিনা পাইলট হাই স্কুল, ১৯২০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুটি অটল বিহারী হাই স্কুল, ১৯২০ সালে কুমিল্লায় চন্দনা কে.বি হাই স্কুল, ১৯২১ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এইচ. জে পাইলট হাই স্কুল উল্লেখযোগ্য।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ড. এস. এম খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলাম, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ প্রমুখ।
সভায় কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা য় আহ্ছানিয়া মিশন পরিচালিত শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও নানা পেশার বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়। এতে বিভিন্ন এলাকার নিম্ন আয়েরসহ নানা পেশার অসংখ্য মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করে।