বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের প্রতিযোগিতা পর্বের জন্য মনোনীত হয়েছে চলচ্চিত্র পরিচালক জাফর ফিরোজের চিত্রনাট্য “দ্যা আনসারটেনিটি”। বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের সাথে এখন লড়ছে বাংলাদেশের এই চিত্রনাট্য । জাফর ফিরোজ বলেন- চিত্রনাট্যটি লিখা হয়েছে সত্য গল্প অবলম্বনে। গল্পটি আমার বাবার। ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে ১০ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। তখন ভোলার অনেক পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। অনেক পরিবার তাদের আত্মীয়স্বজন, বাবা-মা, ভাইবোন হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছিল। সেই জলোচ্ছ্বাসে আমার এক বোন হারিয়ে যায়। তিনিই ছিলেন তখন বাবার একমাত্র সন্তান। তখন আমাদের কারোই জন্ম হয়নি। বাবাকে দেখিছি মেয়েকে খোঁজার জন্য বিভিন্ন যায়গায় চলে যেতেন। যখন শুনতেন অমুক যায়গায় একটি মেয়ে পাওয়া গেছে; বাবা ছুটে যেতেন সেখানে। এখনো বাবাকে তার হারিয়ে যাওয়া মেয়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখি। সেই জলোচ্ছ্বাসে আমাদের পরিবারে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা আমি উপলব্ধি করেছি। একটি সুন্দর সাজানো সংসার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমি এই গল্পে তা তুলে আনার চেষ্টা করেছি।
পুরো বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তনে সমাধানের বিষয়ে একমত তখন জাফর ফিরোজের এই চিত্রনাট্যটি জনসচেতনতায় ভূমিকা রাখবে।
জাফর ফিরোজ একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, লেখক এবং উপস্থাপক। তাঁর নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘দূরবীন’। তিনি তার কাজের জন্য পেয়েছেন আন্তর্জাতিক পুরষ্কার। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফোরাম (আইএফএফ) এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে তিনি কাজ করছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বাংলা সাহিত্যে অধ্যয়ন শেষ করে মোম্বাই থেকে নিলেন চলচ্চিত্রের পাঠ। চলচ্চিত্রে মাস্টার্স শেষ করে এখন চলচ্চিত্র বিষয়ে পিএইচডি করছেন মালয়েশিয়াতে। তাঁর প্রকাশিত প্রথম শিশুতোষ গ্রন্থ ‘খুকী ও প্রজাপতি’প্রকাশ পায় ২০১৮ সালে। ‘সালাম লিখেছে মা’ তাঁর লিখা একটি দেশাত্মবোধক গান। গানটি এর মধ্যে জাতিসংঘের ছয়টি ভাষায় গাওয়া হয়েছে।