সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে, যা দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় হুমকিস্বরূপ। তাই তামাকপণ্যের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ জরুরী বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি।
আজ ১২ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’- এর প্রতিনিধিবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
স্পিকার বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকার নানান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু তামাক ও তামাকজাতপণ্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এসব উদ্যোগ ব্যর্থ হবে। দেশে তরুণদের মধ্যে ধূমপানসহ তামাকপণ্য ব্যবহারের হার বাড়ছে। তাঁদেরকে রক্ষা করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। এজন্য এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সকলের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে শক্তিশালী করার পাশাপাশি, বাস্তবে এর প্রয়োগ করাটাও জরুরী। এছাড়াও দেশে ই-সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন ধরণের এসব পণ্যে থাকা উপাদান সিগারেটের মতোই সমান ক্ষতিকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে, এসব থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
এসময় পার্লামেন্টারি ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি তামাক নিয়ন্ত্রণে সংসদ সদস্যবৃন্দের বিভিন্ন উদ্যোগ স্পিকারের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণও তামাক। তামাকের কারণেই আমাদের স্বাস্থ্যবাজেটের বেশীরভাগ অর্থ চলে যায় চিকিৎসা সেবার পিছনে। এগুলো থেকে মুক্তি পেতে সবার আগে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা জরুরী। পাশাপাশি তামাকপণ্যে করারোপ করে মূল্য বৃদ্ধি করাও গুরুত্বপূর্ণ। পার্লামেন্টারি ফোরামের মাধ্যমে সংসদ সদস্যবৃন্দ এর সবকিছু নিয়েই কাজ করছেন।’
উপস্থিত অন্যান্য সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের বক্তব্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিভিন্ন অসঙ্গতি উঠে আসে। এর মধ্যে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বাতিল করা, তামাকপণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৯০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা, রেস্টুরেন্ট এবং সকল পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ধূমপান বন্ধ করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সকল স্পন্সরশিপ ও কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা উল্লেখযোগ্য।
আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন শিরিন আখতার এমপি, রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, এডভোকেট সৈয়দা রুবিনা আক্তার এমপি এবং অপরাজিতা এমপি।