গতকাল ৫ জুন ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। প্রতিবছরের মতো এ বছরও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয়ে পলিত হয়েছে দিবসটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে নানা কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রোববার সকালে একটি পরিবেশ সচেতনতা মূলক র্যালী আয়োজন করা হয়। প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে র্যালীটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর নেতৃত্বে র্যালীতে বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন। র্যালীতে পরিবেশ সচেতনতামূলক বাণী সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয়। র্যালী শেষে পরিবেশবান্ধব গাছ রোপণ করা হয়। উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর একটি আম গাছের চারা রোপণ করেন।
এরপর সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে আয়োজিত সেমিনারটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, পরিবেশ আমাদের জীবনের সাথে যুক্ত। একে যদি ধ্বংস করে ফেরি তবে পরিণতি মারাত্বক। কিন্তু আমরা তাকে অবজ্ঞা করেছি। আজকে নগরায়নের নামে আধুনিকতার নামে সভ্যতার নামে আমরা পরিবেশকে নির্বিচারে ধ্বংস করছি। গাছপালার সাথে সাথে অন্যান্য প্রাকৃতিক অনুষঙ্গ এমন কী কীটপতঙ্গগুলোকে ধ্বংস করছি। শুধু গাছপালা তা নয়;কীট পতঙ্গও আমাদের পরিবেশের অংশ।
তিনি বলেন, অন্যান্য প্রাণীর মতো মানুষও একটি প্রাণী। এই প্রাণীটি আছে বোধহয় প্রকৃতির মধ্যে একটু এলোমেলো ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা মানুষরাই প্রকৃতির স্বাভাবিক রূপকে নষ্ট করছি। মানুষ আছে বলে সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা না করে প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। আমাদের সভ্য হতে হবে। সভ্যতা কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে নয়। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখে আমরা যেন আমাদের কাজটি করতে পারি। এ ব্যাপারে যেন গবেষণা করি। আর সে গবেষণা যেন জনকল্যাণে হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, মরু সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে নিসর্গ প্রকৃতির সংস্কৃতি। কারণ এটি আমাদের বাঁচবার জন্য নিয়ামক হবে। আর সেজন্য গবেষণা করতে হবে। আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ইতোমধ্যে সে ধরনের কাজ করছে। এইসব কাজ দিয়ে তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাবে, যাতে আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের নাম আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সাহাবউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সমীর কুমার শীল, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস. বিপুলেন্দু বসাক। এসময় বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।