কটকটে হলুদ রং, ছোট্ট ছোট্ট তিনটে আঙুল আর অদ্ভুত সব অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে বিদঘুটে ভাষা এই হচ্ছে মিনিয়নদের চেনার উপায়। ২০১০ সালে ইউনিভার্সাল পিকচার্সের স্টুডিও ইলুমিনেশন এন্টারটেইনমেন্টের অ্যানিমেশন ছবি ‘ডেসপিকেবল মি’-তে প্রথম দেখা গিয়েছিল মিনিয়নদের, ক্রিমিনাল মাস্টারমাইন্ড গ্রু আর তার বন্ধু ড. নেফারিওর অনুগত হিসেবে। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া একই ছবির সিক্যুয়ালেও আছে তারা, আছে ২০১২ সালের অ্যানিমেটেড ছবি ‘দ্য লোরাক্স’-এও। ‘ডেসপিকেবল মি’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ছবি হিসেবে ২০১৫ সালের ১০ জুলাই মুক্তি পায় ‘মিনিয়নস’। এ ছবিটি দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। প্রায় সাত বছর পর এবার পর্দায় আসছে এর সিক্যুয়েল ‘মিনিয়স: দ্য রাইজ অব দ্য গ্রু’। ‘ডেসপিকেবল মি’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম ছবি এটি। আগামী ১ জুলাই আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ছবিটি। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে এ ছবি। কাইল ব্যাল্ডা পরিচালিত এ ছবিতেও গ্রু চরিত্রে কন্ঠ দিয়েছেন স্টিভ ক্যারেল। গ্রুকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে এ ছবির গল্প। তবে আগের মতোই মিনিয়নস এর অদ্ভুত সব কার্যক্রম ও কমেডি রয়েছে এখানে।
প্রথম ছবিতে আঁকাবাঁকা দাঁত থাকলেও ডেসপিকেবল মি টু তে মিনিয়নদের দেখা গেছে সোজা দাঁতে। নীল রঙের প্যান্টের সঙ্গে হাতে কালো দস্তানা আর চোখে ধাতব চশমা পরা, লম্বাটে বা গোল মাথা, কারও মাথায় চুল আছে, কারও মাথায় নেই, কেউ একচোখো আবার কারও দুটোই চোখ। তবে দেখতে যেমনই হোক, ওদের কান্ডকারখানা দেখলে হাসি চেপে রাখা কঠিন।
মিনিয়নদের কারিগর হলেন ‘ডেসপিকেবল মি’ চলচ্চিত্রের আর্ট ডিরেক্টর এরিক গুইলন। শুরুতে ভাবা হয়েছিল মিনিয়নদের বানানো হবে বিশালাকার করে। কিন্তু স্টুডিওর অর্থসংকটের কারণে পরে তা আর করা যায়নি। এখন পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া গেছে ৪৮ ধরনের মিনিয়নের, যাদের সংখ্যা দশ হাজারের বেশি। এদের সবার আবার আলাদা ইংরেজি ডাকনাম আছে। মিনিয়ন শব্দের মানে বলতে বোঝানো হয় ভৃত্য বা অনুগত। মনিব গ্রুকে খুব ভালোবাসলেও মিনিয়নরা প্রায়ই তার কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন রকম গোলমাল পাকিয়ে ফেলে। আর এ জন্য গ্রুকে পড়তে হয় ফ্যাসাদে। তবে গ্রুও কিন্তু তার পোষা মিনিয়নদের খুব ভালোবাসে, এমনকি তাদের প্রত্যেকের নামও আলাদাভাবে জানা তার। গ্রু আর ড. নেফারিওর সব শয়তানি পরিকল্পনায় সিদ্ধহস্ত হলেও একই সঙ্গে তারা খুব বন্ধুবৎসল আর কৌতুকপ্রিয়। মিনিয়নরা অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে, ভয়ংকর সব অস্ত্র বানাতে পারে, কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে, এমনকি গাড়িও চালাতে পারে। অনলাইনে মিনিয়নদের নিয়ে মানুষের মাতামাতি দেখেই মিনিয়নের জনপ্রিয়তার আঁচ পাওয়া যায়। মিনিয়ন আর তাদের মজার কথা নিয়ে বানানো হয়েছে ইন্টারনেট আর ফেসবুক মেমে। ইউটিউবেও মিনিয়নরা খুবই জনপ্রিয়। মিনিয়নদের নিয়ে ভিডিও সাইটগুলোতে আরও আছে বিভিন্ন শর্টফিল্ম, আর কভার করা গান। মোবাইল গেমস, অফিশিয়াল রাইড, খেলনা, টি-শার্ট থেকে শুরু করে নেইল আর্টের ডিজাইনেও মিনিয়নরা সগৌরবে উপস্থিত। এমনকি ইলুমিনেশন এন্টারটেইনমেন্টের অফিশিয়াল মাসকটও হলো মিনিয়ন। এত জনপ্রিয় যারা তারা যখন আবার পর্দায় আসছে নতুন ছবি নিয়ে তখন দর্শকের কৌতুহলটা কেমন সেটা অনুমান করাই যায়। বিশেষ করে অ্যানিমেশন ছবির ভক্তরা রীতিমত উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। এই উচ্ছ্বাসের পারদ কতখানি উপরে ওঠে সেটা দেখা যাবে ছবি মুক্তির পর।