
লিপি জেসমিন। পেশায় তিনি ব্যাংকার হলেও মনের মাঝে ধারণ করেন লেখক সত্বাকে। আর এ কারণেই হয়তো কাজের ফাঁকে ফাঁকে যখনই অবসর পান লিখতে বসে যান। তবে লেখালেখির জগতে তার আগ্রহের জায়গা জুড়ে গদ্য সাহিত্য। ছোট গল্প লেখার মাধ্যমে আশেপাশের মানুষদের জীবন ও জীবিকার আদৌপান্ত তুলে ধরেন। সেই লেখনি যদি কোন পাঠককের হৃদয়কে আলোড়িত করে তাতেই তৃপ্তি খুঁজে পান লিপি জেসমিন।
কুষ্টিয়ার গন্ধ মেখে বেড়ে ওঠা লিপি জেসমিনের নানা জমির বিন জিয়ারত ছিলেন কবি ও সাহিত্যিক। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উপর তাঁর বেশ কিছু প্রকাশনা রয়েছে। লেখক নানার প্রভাব তাই লিপি জেসমিনের উপর স্বভাবতই এসে পড়েছে। একারণে অজান্তেই হয়তো লিপি জেসমিন নানার উত্তরসূরি হিসেবে লিখে চলেছেন।
লিপি বলেন, তার নামটি মূলত তার নানাই রেখেছেন। লিপির ইংরেজি স্ক্রিপ্ট। অর্থাৎ, নানা যেহেতু লেখক ছিলেন, তাই আমার নামের মাঝেও তাঁর লেখক পরিচয়টিকেই মূলত তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নানা আমাকে নিয়মিত চিঠি লিখতেন। আমিও সেগুলোর উত্তর দিতাম। এভাবেই মূলত আমার মধ্যে লেখালেখির শেকড় রোপন করেন আমার নানা। আর এ কারণেই পরবর্তীতে লেখালেখিতে আমার আগ্রহ সবসময়ই থেকেছে।
লিপি জানান, শহীদ আনোয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যাগাজিনে তার লেখা প্রথম ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। তখন তিনি অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন। এরপর বিএসএফ শাহীন কলেজের বার্ষিক ম্যাগাজিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, ডিবেটিং সোসাইটি, পরিবহন সংগঠনের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সংকলনেও তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
ইতিমধ্যে একটি ছোট গল্পের বই প্রকাশ হয়েছে লিপি জেসমিনের। ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলাতে ‘জেনিফার’ শিরোনামের এই বইটি প্রকাশ পায়। রিদম প্রকাশনা সংস্থার ব্যানারে প্রকাশিত এই বইটিতে মোট ৯টি ছোট গল্প স্থান পেয়েছে। গল্পগুলোর প্রাঞ্জল্যতা ও কাহিনীর বৈচিত্র্য সহজেই পাঠককে আকৃষ্ট করবে।
বর্তমান জেনারেশন আগের মতো আর বই পড়ায় সময় দেয় না বলে মনে করেন লিপি জেসমিন। তিনি বলেন, আমাদের সময়ে যেভাবে দেখতাম সকলে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তো, এখনকার প্রজন্মের মধ্যে সেরকম আর তেমন দেখা যায় না। অথচ এই পাঠ অভ্যাসটি থাকা খুবই জরুরি। বই পড়ার অভ্যাস একজন মানুষের দৃষ্টি খুলে দেয়।
প্রসঙ্গত, লিপি জেসমিন বর্তমানে কানাডা প্রবাসী। ২০০৭ সালে তিনি স্কিলড ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কানাডা পাড়ি জমান। সেখানে ফাইন্যান্স এবং ব্যাংকিং এর পড়াশোনা করে এরপরের বছরই যোগ দেন স্থানীয় রয়্যাল ব্যাংক অব কানাডাতে। কানাডার স্থানীয় বাংলা পত্রিকা ও আলবার্টা প্রদেশের রাজধানী এডমন্টনের সংগঠন ‘বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব এডমন্ট’ এর বার্ষিক ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখছেন তিনি। পারিবারিক জীবনে স্বামী ও এক পুত্র সন্তানের জননী লিপি জেসমিন।
Awesome. Great News.
আমাদের বংশে লিখালিখির আগ্রহ নেই বললেই চলে। বংশের মধ্যে একমাত্র লিপি জেসমিনই চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার আগ্রহ দিনদিন বৃদ্ধি কামনা করছি। একথা বলাবাহুল্য যে, ইদানীং বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বইপাড়া ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে,ছেলেমেয়েরা এনালগ যুগকে বিদায় দিয়ে ডিজিটাল যুগকে প্রাধান্য দিতেছে। সেই আমলের ফাউন্টেন পেন এখন যাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বর্তমানের বলপেনের ব্যবহারও দিনদিন কমে যাচ্ছে। আধুনিক যুগের ছেলেমেয়েরা এখন এন্ড্রয়েড মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহারে বেশ সাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কাগজে হাতে লিখা একপ্রকার ভুলেই গেছে। লিখতে গেলে কলম ভেঙ্গে ফেলে।