বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাব এর যৌথ উদ্যোগে দেশের দ্বিতীয় ডিজিটাল পল্লী হচ্ছে পদ্মাপাড়ের জেলা শরীয়তপুরে। মঙ্গলবার জেলার ডামুড্যা ইউএনও সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল কমার্স ভিলেজের উদ্বোধন করেন শরীয়তপুর-৩ সংসদীয় সদস্য নাহিম রাজ্জাক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিম রাজ্জাক বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়যুক্ত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক ভাবে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি বা অবকাঠামো ও সংযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক ভাবে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করেন। এর পর ধাপে ধাপে সরকারে প্রতিটি বিভাগের সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড ডিজিটাল অপানেসন ম্যানুয়াল উপস্থাপন করেন যার প্রকাশ ঘটছে ই-টেন্ডার ও ই-নথির মতো বিষয়ের মধ্য দিয়ে। সকলকে অনলাইনে সংযুক্ত করেন। ২০১৫ সালে তা গ্রামকে শহরে রূপান্তরের ঘোষণা দেন। ডিজিটাল পল্লী তারই বাস্তব উদাহরণ। এর মাধ্যমে আমাদের এই এলাকার মৎস্য সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ই-ক্যাব’র ডিজিটাল পল্লী ডামুড্যার আর্থ-সামাজিক অবস্থা বদলে দিতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিবা খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান ডিজিটাল পল্লী কর্মসূচির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম খলিল। কীভাবে ডামুড্যা গ্রামকে ই-কমার্স এর শক্তিতে ডিজিটাল পল্লী হিসেবে রূপান্তর করা হবে তার কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেন ডিজিটাল পল্লী কর্মসূচির ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহিদুজ্জামান সাঈদ।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান, পুলিশ সুপার সাইফুল হক এবং ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
তমাল এসময় বলেন, সমাজে বিদ্যমান সক্ষমতা প্রমাণের অসম অবস্থা তথা বৈষম্য দূর করতে ডিজিটাল শক্তি তথা ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে ই-ক্যাব প্রচলিত ব্যবসার ডিজিটাল রূপান্তরে কাজ করছে ই-ক্যাব। স্থানীয় উপকরণ বা সম্পদকে কেন্দ্র করেই আমরা গ্রামের উদ্যোক্তা এবং ভোক্তারা যেনো সহজেই ডিজিটাল কমার্সের যাবতীয় কল্যাণ উপভোগ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। ডিজিটাল কমার্সের সুবিধা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিয়ে, গ্রাম ও শহরের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনাই ডিজিটাল পল্লী’র প্রধান উদ্দেশ্য। আর এই লক্ষ্যেই মানিকগঞ্জের পর শরিয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলাকে ডিজিটাল পল্লীতে রূপান্তর করা হবে।
অন্যান্যের মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাচ্চু, সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লু,মাসুদুর রহমান শেখ, গোলাম মওলা রতন, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ, খাদিজা খানম লাকি, অর্থ সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ এবং আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফয়সাল খান।
প্রসঙ্গত, ডিজিটাল কমার্স ভিলেজ/ডিজিটাল পল্লী এমন একটি উদ্যোগ যার আওতায় একাধিক মডেল গ্রাম তৈরি করা হবে, যেখানে ডিজিটাল কমার্সের যাবতীয় সকল সুবিধাই বিদ্যমান থাকবে। প্রকল্পের অধীনে ২০০ জন উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়াার পাশপাশি ১ টি ফেসিলিটিস সেন্টার, ১ টি কল সেন্টার, ডেলিভারী সার্ভিস, মার্কেটপ্লেস তৈরি, ডিজিটাল পেমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা, প্রোডাক্ট ক্যাটালগ ম্যানেজমেন্ট সেবা প্রস্তুত করা হবে। আর এই মডেল গ্রামের আঙ্গিকে দেশব্যাপি গড়ে তোলা হবে হাজারো ডিজিটাল কমার্স ভিলেজ/ডিজিটাল পল্লী।