শনিবার, এপ্রিল ২০Dedicate To Right News
Shadow

“কোন অডিও কোম্পানী আর কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা”

Spread the love
  • আসিফ আকবর

গত বাইশ বছর অডিও সার্কিটের সব ডাইমেনশনে কাজ করেছি। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্যাসেট সিডির যুগ গত হয়েছে ২০১০ সালেই। এখন ইউটিউবের যুগও ধুঁকছে, একটি গানে কোটি ভিউয়ে রিটার্ন বিশ হাজার টাকাও আসেনা। মিউজিক ভিডিওতে মোটা অঙ্ক বিনিয়োগ করে ভিউয়ের ইঁদুর দৌড় আপাতত শেষ। গানের প্রডিউসররা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেছিল নাটকের পিছনে, সেই খাতও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। নাটকের ভিতরে গান ঢুকিয়ে আপৎকালীন অক্সিজেন দিয়ে গানের ব্যবসার দিনও শেষ। সব মিলিয়ে গানের বাজারে পেশাদার অডিও প্রযোজকরা এখন সরে যেতে বাধ্য হয়েছে, আর কখনোই ফিরে আসবে না।

প্রযোজকদের দ্রুত মুনাফা অর্জনের ধান্দা আর গানের সাথে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ভুলের কারনেই গানের বাজার মৃত। এখন অ্যামেচার শিল্পী আর মৌসুমী প্রযোজকদের জন্যই কিছু বিনিয়োগ ঢুকছে। ইউটিউব নির্ভরতার কারনে মূলত এই বিপর্যয়। বিশ্বের প্রায় দুইশো অ্যাপ বা পোর্টালে ডিজিটালি গান বিক্রির সুযোগ আছে, সেখানে কোম্পানীগুলো পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে, নতুন বিনিয়োগের সক্ষমতাও হারিয়েছে। কপিরাইটের আইনী দূর্বলতায় সিনেমার গানের রেভিনিউ একচেটিয়া ভোগ করছে দু’একটি কোম্পানী, এবং তারা পুরোটাই ফাও খাচ্ছে। আসছে রোজার ঈদের অডিও বাজার দেখলেই সবাই বুঝে যাবেন গানের বাজারের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।

গ্রামীনফোন ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়ে গানের সাথে সমস্ত সম্পৃক্ততা গুটিয়ে নিয়েছে। অতিউৎসাহী কিছু শিল্পী গীতিকার সুরকারের মামলার কারনে অন্য টেলকোগুলোও গানের জগতে ব্যবসা বৃদ্ধির আগ্রহ দেখায়নি। এই ফাঁকে গানের বাজারের দখল নিবে বহুজাতিক কোম্পানী, তবে সেখানে লিমিটেড কিছু আর্টিস্ট ছাড়া সবার কাজের সুযোগ থাকবে না। মিউজিক ভিডিওতে লাগামহীন পুঁজি খাটানো প্রযোজকদের হিসাব মিলাতে গিয়ে মাথার চুলে পাক ধরেছে ইতিমধ্যে। দীর্ঘ গবেষণায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কোন অডিও কোম্পানী আর কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা। গীতিকার সুরকার শিল্পী আর প্রযোজকদের মধ্যে বানরের পিঠা ভাগের মত যুদ্ধ চলছে চলবে, আর এটাই এই দেশের স্বার্থপর শিল্পীসমাজের আসল নিয়তি।

[লেখক: সঙ্গীতশিল্পী]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *