কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সিডনির অন্যতম নারী সংগঠন “আমাদের কথা” গতকাল ১৩মে সিডনির ইঙ্গেলবার্ন গ্রেগ পার্সিভাল কমিউনিটি হলে আয়োজন করে “রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসব”। “অন্তরে জাগিছ হে অন্তর্যামী” শিরোনামে অনুষ্ঠানটির পুরোটা জুড়েই ছিল কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন তাঁরই সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় ও একক গান,কবিতা,নাচ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আলোচনা সব মিলিয়ে পুরো হল জুড়েই যেন ছিল বিশ্বকবির বন্দনা।
আমাদের কথার সভাপতি পূরবী পারমিতা বোসের পরিচালনা এবং মঞ্জুশ্রী মিতা ও শাহরীন রলির উপস্থাপনায় শুরুতেই একক সংগীত পরিবেশন করে শিশু শিল্পী চিত্রা ও দিহান পরে দলীয় সংগীত ছিল (সারা, নিথিলা, চিত্রা, প্রজাপতি, চন্দ্রা, পারমী, আলিজা ও ঈশিকা)।বড়দের দলীয় ও একক সংগীত পরিবেশন করে বাঁধন, সূবর্না তালুকদার, পেট্রেসিয়া প্রমা, মারিয়া মুন, আয়শা কলি, জুঁই সেন পাল, মধুমিতা সাহা।নৃত্য পরিবেশন করেন আরিও, প্রজাপতি, শামিকা ও ঈশিকা, কুমকুম, তিথি, স্মীতা, মিশা, ফারীন, শ্রেয়সী দাশ ও দলীয় নৃত্যে প্রেরনা ড্যান্স একাডেমীর জেরীন তাসলিমা মারশিয়া ও জ্যোতি।কবিতা আবৃত্তি করেন পৃথিবী তাজওয়ার, মিলি ইসলাম, দেবী সাহা ও শহীদুল আলম বাদল।যন্ত্র সহযোগিতায় ছিলেন দিব্যজ্যোতি বড়ুয়া, পার্থ বড়ুয়া, নামিদ ফারহান, অনাদি ।শব্দ নিয়ন্ত্রনে ছিলেন এ্যালেন জোসেফ ও তাপস কর।সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন আবদূল্লাহ আল মামুন মইনুল হাসান সুমন, ফাহাদ আজগর ও অর্ক হাসান।ফটোগ্রাফীতে ছিলেন রাই ফটোগ্রাফীর তাপস পাল ও সন্দীপন।
প্রবাসে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশী কবিগুরুকে পরিচয় করিয়ে দিতে কবিগুরু বন্দনায় ছোটদের অংশগ্রহন ছিল উল্ল্যেখযোগ্য।তিন ঘন্টা জুড়ে “আমাদের কথা’র” শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা হল ভর্তি দর্শক দারুন উপভোগ করেছেন।প্রবাসে রবীন্দ্রপ্রেমী বাংলা ভাষাভাষী দর্শকরা সত্যিকার অর্থেই এই জন্মজয়ন্তী উৎসবেই মেতে ছিলেন সেদিন।উক্ত উৎসবে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত স্থানীয় কাউন্সিলরগন,বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকগনও উপস্থিত ছিলেন।
“আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে” গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়।অনুষ্ঠানের তারপর একে একে ছোটদের পরিবেশনায় নাচ গান আবৃত্তি ও বড়দের নাচ গান আবৃত্তি চলতে থাকে।অনুষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিবর্গের মত প্রকাশে উঠে এসেছে কিভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অনবদ্য সৃষ্টির মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে বাঙালি হৃদয়ে জুড়ে আছেন এবং থাকবেন।
পুরো আয়োজনটিকে আরও বেশী উপভোগ্য করে তুলেছিল অনুষ্ঠানের দারুন মঞ্চসজ্জা, রবীন্দ্র রচনা সমগ্র, গ্রামোফোন, রবীন্দ্র ফটো কর্নার ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিসংবলিত বিশেষ রবীন্দ্র-কোণ।নারী দর্শকদের সকলেই সেজেছিলেন উপন্যাসে পড়া রবীন্দ্র নায়িকাদের মত সেই চিরাচরিত সাজে।
সবশেষে একেবারে নতুন ধারায় রবীন্দ্রসংগীতের জনপ্রিয় গানের এক মিশ্র পরিবেশনা করেন কোরাস শিল্পীগন।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষ রবিঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ কেক কাটা হয়।অপুর্ব কেকটি তৈরী করেছেন আমাদের কথার সদস্য আয়শা ইসলাম তন্নী।বাঙালী মানেই ভোজন বিলাসী তাই সকল অতিথিদের নৈশ ভোজনের পর উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।