শুক্রবার, মার্চ ২৯Dedicate To Right News
Shadow

বাংলাদেশে পালিত হলো বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস

Spread the love

প্রতিবছরের মতো এবছরও ‘প্রযুক্তি হবে সকলের জন্য প্রবেশগম্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে বাংলাদেশে পালিত হলো বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস। এলক্ষ্যে ১৮ মে ২০২৩ রাজধানীর আগারগাঁও-এ অবস্থিত আইসিটি টাওয়ারে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এবং ফ্রেন্ডশিপ (সোশ্যাল পারপাস অর্গানাইজেশন)-এর যৌথ আয়োজনে সচেতনতামূলক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর সচিব জনাব মো. সামসুল আরেফিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রেন্ডশিপ এর ডেপুটি ডিরেক্টর আহমেদ তৌফিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

২০১২ সাল থেকে সারাবিশ্বে প্রতি বছর মে মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক অভিগম্যতা সচেতনতা দিবস কিংবা গ্লোবাল অ্যাক্সেসিবিলিটি অ্যাওয়ারনেস ডে (জিএএডি) পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসটির মূল লক্ষ্যে হচ্ছে সারাবিশ্বে এক বিলিয়নেরও বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অভিগম্যতার ব্যাপারে সকলকে সচেতন করে তোলা। এই বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে বাংলাদেশেই বসবাস করে ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি ব্যক্তি। এই দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে এটুআই ইতোমধ্যে একাধিক সেমিনার, পরামর্শ সভা আয়োজন করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল নীতি নির্ধারক থেকে সাধারণ নাগরিক সকল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করা।

২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সেবা প্রদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে আইসিটি সচিব জনাব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, এলক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমরা একটি এক্সেসিবিলিটি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছি। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন তখনই সম্ভবপর হবে, যখন নাগরিকের জন্য নাগরিক-বান্ধব অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সরকারি সেবা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে। এলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ-এর সকল ওয়েবসাইট এবং ডিজিটাল সেবা এবছরের মধ্যেই সকলের জন্য অভিগম্য করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে জনবান্ধব ডিজিটাল সেবা তৈরিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে একযোগে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের স্লোগানই হলো সকলের জন্য অভিগম্য ডিজিটাল সেবা। এটুআই থেকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গসহ সকল স্তরের জনগণের জন্য বিদ্যমান ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল সেবা অভিগম্য করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটুআই-এর ইনক্লুসিভ ডিজিটাল বাংলাদেশের নানা উদ্ভাবনী কার্যক্রম তুলে ধরেন তিনি। ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ ও ডিজিটাল সেবায় অভিগম্যতা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক।

ফ্রেন্ডশিপ-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জনাব আহমেদ তৌফিকুর রহমান বলেন, ফ্রেন্ডশিপ প্রত্যন্ত চরে, দক্ষিণাঞ্চলের উপকূল এলাকায় এবং কক্সবাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কাজ করে আসছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা বাস্তবায়নে একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে এটুআই’কে সার্বিক সহযোগিতা করবে ফ্রেন্ডশিপ।

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট- এটুআই ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিমূলক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই দিবসটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল (ওয়েব, সফটওয়্যার, মোবাইল, ইত্যাদি) অভিগম্যতা, বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে সকলকে অবহিতকরণ এবং চিন্তার দ্বার উন্মোচনকরণ নিয়ে কাজ করে। স্থানীয় পর্যায়ে এই দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রতিবন্ধীবান্ধব ওয়েব, মোবাইল অ্যাপ এবং ডিজিটাল সেবাসমূহ সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। এছাড়াও, সেবা প্রদানকারী সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের স্ব স্ব ডিজিটাল সেবা প্রবেশগম্য করার বিষয়ে সচেতনতা এবং উৎসাহ পাবে্ন বলে আশা করা যায়।

এটুআই এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট (এক্সেসিবিলিটি) জনাব ভাস্কর ভট্টাচার্য অভিগম্যতা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি অভিগম্যতা সম্পন্ন ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল সেবা প্রদর্শন করেন। সহায়ক প্রযুক্তির সাহায্যে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কীভাবে ডিজিটাল সেবা এবং ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন সে সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারণা প্রদান করেন।

এটুআই-এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ইনোভেশন জনাব মানিক মাহমুদ-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এটুআই এবং ফ্রেন্ডশীপসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা ওয়েব বা ই-সেবার অভিগম্যতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তাদের মূল্যবান মতামতের মাধ্যমে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানকারী নির্বাচিত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *