নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত ফেলোশিপ প্রোগ্রাম সফলভাবে সমাপ্ত করায় বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে দেশের ২৭ জন তরুণ রাজনৈতিক নেতাকে সনদ প্রদান করেছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল।
ইউএসএআইডি -এর স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে।
গ্রাজুয়েটকৃত ফেলোরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, এবং জাতীয় ছাত্র সমাজের সক্রিয় নেতৃবৃন্দ। এটি ছিল ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের ২২ তম ক্লাস। চার মাসব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণকারীরা রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব দক্ষতা, রাজনৈতিক চর্চা, দ্বন্দ্ব নিরসন, দল সুসংগঠিতকরণ ও গণমাধ্যমের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে বিশদ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের লক্ষ্য হল তরুণ নেতাদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা, তাদের রাজনৈতিক দলে তাঁদের অগ্রযাত্রাকে সমৃদ্ধ করা, অন্যান্য রাজনৈতিক দলে তাঁদের সমকক্ষদের প্রতি সহমর্মিতা বৃদ্ধি এবং পেশাদার সম্পর্ক তৈরি করা যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গুণগত পরির্তন আনতে পারে। ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে বাংলাদেশের তরুণ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বেশ সুপরিচিত কারণ এটি নেতৃত্ব এবং রাজনীতি বিষয়ে শেখার অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করে যা সাধারণত অন্য কোথাও সুলভ নয়।
এই গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, এমপি; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল; জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি; এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস ফেলোদের মধ্যে ফেলোশিপ সনদপত্র বিতরণ করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউএসএআইডি’র রাজনৈতিক প্রক্রিয়া উপদেষ্টা লুবাইন চৌধুরী মাসুম।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এই ফেলোশীপের সুযোগ যারা পেয়েছেন তারা সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দক্ষতা বাড়ে। আর এই প্রশিক্ষণ যারা দিয়েছেন তারা তরুণ নেতৃবৃন্দকে সঠিক দিক নির্দেশনায় দিয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। আগামীর হাল ধরার জন্য তিনি তরুণদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, তরুন রাজনীতিকদের সাথে পুরনোদের যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে তা পূরণে কাজ করছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। এই সেতুবন্ধন তৈরিতে ডিআইডি সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণরা রাজনীতি বিমূখ হলে ভবিষ্যত নেতৃত্বের জন্য হুমকি হবে।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এখনকার তরুণরা চায় সমস্যা সমাধানের রাজনীতি, তারা ভবিষ্যতের রাজনীতি করতে চায় ভবিষ্যতের মানুষের জন্য। সিনিয়রদের রাজনীতিকদের ব্যর্থতা হলো তরুণ প্রজম্মের সাথে তারা সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারেননি। নানা প্রতিবন্ধকতা থাকবেই তবুও তরুণদের রাজনীতি এসে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
সমাপনী বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, `ভবিষ্যতের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও হয়তো আজকের এই রুমে আছেন। আপনাদের প্রতি সেই আস্থা আছে বলেই ইউএসএআইডি আপনার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় নানা সমস্যা সমাধানে যে গ্যাপ ছিলো তা ফেলোশীপ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারীরা সমাধানে একসাথে কাজ করেছেন।‘ এটি শেষ নয়, বরং সম্মিলিতভাবে এই অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমকে এখান থেকে আরও এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
এই অনুষ্ঠানে গ্রাজুয়েশনকৃত ফেলোরা ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ ক্লাস থেকে তাঁরা যা শিখেছেন এবং তৃণমূলে তাঁরা কি উপায়ে তরুণদের রাজনৈতিক অনীহা দূর করতে চান তা নিয়ে পরিকল্পনা করেন। এছাড়া, নিজ নিজ এলাকায় গণতান্ত্রিক অনুশীলনের মাধ্যমে কীভাবে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারেন সেই ধারণা উপস্থাপনা করেন। এখন পর্যন্ত মোট ৫৩৬ জন তরুণ রাজনৈতিক নেতা এই কর্মসূচি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।
ইউএসএআইডি সম্পর্কে: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে আট’শ কোটি ডলারেরও বেশী উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ৭ কোটি ডলারের বেশি প্রদান করেছে। ২০২০ সালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ২০ কোটিরও বেশী ডলার প্রদান করেছে ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যে সকল কর্মসূচিতে সহায়তা প্রদান করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সংগে খাপ খাওয়ানো।