ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য ভবিষ্যৎ স্মার্ট নাগরিক এবং লিডারশিপ তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করা হবে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজকে। তিনি বলেন, দেশের তরুণ প্রজন্মের গবেষক ও উদ্ভাবকদেরকে গবেষণার আরও বড় পরিসরে সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ‘শেখ জামাল ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাব’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া ফেব্রিকেশন ল্যাব এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পূর্ণ আরেকটি স্পেশালাইজ ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী ১২ মে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত “৭ম ডিআরএমসি আন্তর্জাতিক টেক কার্নিভাল ২০২৪” এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ভবিষ্যৎ গবেষণা এবং উদ্ভাবনের জন্য এসব সেন্টারে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে উদ্ভাবক ও গবেষকরাও গবেষণার সুযোগ পাবে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে একটা হোল অব গভর্নমেন্ট অ্যাপ্রোচ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই আমরা। যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রত্যেককে আমরা সমানভাবে সুযোগ এবং সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে হলে শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ের মধ্যেই থাকলে হবে না, আমাদের জ্ঞান আহরণের জন্য যে সম্ভাবনা দুয়ার খোলা আছে সেগুলো উন্মোচন করে দিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী ছাত্রদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমি আগামী বছর এই ইন্টারন্যাশনাল টেক কার্নিভাল থেকে আমার একটা ডিজিটাল টুইন্স তোমাদের কাছ থেকে উপহার চাই। যেই ডিজিটাল টুইন্স তোমরা তৈরি করবে। যেটা পলকের মতো দেখতে হবে, পলকের কন্ঠে কথা বলবে কোন প্রশ্ন করলেও একটা এআই ব্রেইন হিসেবে আমার মতই উত্তর দিবে।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রী আইডিয়া প্রকল্প থেকে প্রতিবছর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ শেখ জামাল ইনোভেশন গ্রান্ড-এ স্পন্সর করা হবে এবং বড় পরিসরে আয়োজনের জন্য ৫০ লাখ টাকা প্রতিবছর প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।
ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের সভাপতিত্বে অন্যান্যোর মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রধান সমন্বয়ক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নূরুন্নবী, সহকারী অধ্যাপক এবং কার্নিভালের আহবায়ক রাসেল আহমেদ।
এর আগে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর উপস্থিতিতে উদ্ভাবন উন্নয়নে কাজ করার লক্ষ্যে আইডিয়া প্রকল্প ও ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ থেকে শুরু হওয়া প্রায় তিন মাসব্যাপী এ কার্নিভালে অনলাইনে স্টার্টআপ সাবমিশন গত ০১ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত চলে এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেরা দশটি ইনোভেশন গ্রান্ট ০৯, ১০ ও ১১ মে ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত স্টার্টআপ ডিসপ্লেতে ছিল। এছাড়া ইনোভেশন প্রজেক্ট ডিসপ্লে, প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, ওয়েবসাইট ডিসপ্লে, লাইন ফলোয়িং রোবট, লোগো ডিজাইন, টেক আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি ইভেন্টে দেশের চার শতাধিক খ্যাতনামা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লে. শেখ জামাল এর স্মৃতিকে স্মরণ করে নতুন উদ্যোক্তাদের এই আয়োজনের ১ম স্থান অধিকারীকে ৫ লক্ষ টাকা, ২য় স্থান অধিকারীকে ৩ লক্ষ টাকা এবং ৩য় স্থান অধিকারীকে ২ লক্ষ টাকা এবং একই সাথে সেরা পরবর্তী আরো ১০টি স্টার্টআপ এর প্রতিটির জন্য ১ লক্ষ টাকা করে শেখ জামাল ইনোভেশন গ্রান্ট-২০২৪ মোট ২০ লক্ষ টাকা প্রদান করে আইডিয়া প্রকল্প।