- রাজীব ভৌমিক
ক্রাইসিস কমিউনিকেশন নিয়ে কখনো কিছু লিখিনি। লেখায় আমি সবসময় নানারকম উদাহরণ ব্যবহার করি, যার প্রায় সবই আমার ক্যারিয়ারের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার আদলে লেখা। কিন্তু, ক্রাইসিস নিয়ে লিখতে গেলে এরকম উদাহরণ দেয়া কঠিন কারণ উদাহরণের সঙ্গে আসল ঘটনা যদি একটুও মিলে যায়, তাহলে যে কেউ ধরে ফেলতে পারে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন ক্রাইসিসের কথা বলছি। সেটা হবে অপেশাদার আচরণ কারণ তাতে কর্মক্ষেত্রের গোপনীয়তা নষ্ট হবে। তারপরও, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা দেখে মনে হলো, ক্রাইসিস কমিউনিকেশনে আমার অভিজ্ঞতাগুলো লিখে রাখলে কারো কারো কাজে লাগতে পারে।
কোনো ক্রাইসিসই একা ম্যানেজ করা যায় না। টিমমেটদের উপর বিশ্বাস রাখতে হয়, নাহলে বিপদ বাড়ে। যাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে একসাথে মিলে ক্রাইসিস ম্যানেজ করেছি, তাদের নাম সঙ্গত কারণেই বলতে পারছি না। তবে তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা কারণ তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
ক্রাইসিসের ধরণ
আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে ক্রাইসিস মোটামুটি ৪ ধরনের হয়, যথা:
১. আপনার প্রতিষ্ঠান কিছু একটা ভুল করেছে এবং সেটা মিডিয়া/সোশাল মিডিয়াতে চলে এসেছে
২. আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো একটা গুজব ছড়িয়ে পড়েছে বা ভাইরাল হয়ে গেছে
৩. আপনার প্রতিষ্ঠান কিছু একটা ভুল করেছে এবং আপনারা আশঙ্কা করছেন যে সেটা মিডিয়া বা সোশাল মিডিয়াতে এলে ঝামেলা হতে পারে
৪. আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কেউ কোনো গুরুতর (সত্য বা মিথ্যা) অভিযোগ তুলেছে
কোনো ঘটনা কমিউনিকেশন ক্রাইসিস বা reputational crisis হয়ে ওঠার পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই একটা common কারণ থাকে: কমিউকেশন বা পাবলিক রিলেশন্স বিভাগকে আগে থেকে বিষয়টি সম্পর্কে না জানানো। অনেক প্রতিষ্ঠানেই আমি দেখেছি যে, জ্ঞান, দূরদর্শীতা বা প্রশিক্ষণের অভাবে কোনো স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটার সাথে সাথে অথবা কোনো স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কমিউনিকেশনকে জানানো হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে যতক্ষণে জানানো হয়, ততক্ষণে ঘটনা অনেক বড় হয়ে গেছে বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সব স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত বা ঘটনাই ক্রাইসিসে রূপ নেয় না, কিন্তু যেগুলো নেয়, সেগুলোকে ক্রাইসিসে রূপ নেয়ার আগেই ম্যানেজ করা সম্ভব যদি বিষয়টা সম্পর্কে কমিউনিকেশনের আগে থেকে জানা থাকে।
আমার ১৬-১৭ বছরের ক্যারিয়ারে, পার্ট-টাইম এবং ফুল-টাইম মিলিয়ে আমি ৯টা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। তার মধ্যে মাত্র একজন CEO পেয়েছি যিনি ক্রাইসিস আগে থেকে অনুমান করে সম্ভাব্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার গুরুত্ব বোঝেন। সব স্পর্শকাতর ঘটনা বা সিদ্ধান্তকেই তিনি সম্ভাব্য ক্রাইসিস হিসেবে বিবেচনা করেন এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই কমিউনিকেশকে জানিয়ে রাখেন যাতে প্রস্তুতি নেয়া যায়। কমিউনিকেশনের পরামর্শে তিনি বড় প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন, এমন ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ, তিনি কমিউনিকেশনকে গুরুত্বপূর্ণ strategic business partner হিসেবে বিবেচনা করেন এবং কমিউনিকেশনের মতামতকে গুরুত্ব দেন।
মিথ্যা বললে মহাবিপদ
একটা কাল্পনিক উদাহরণ দিচ্ছি: ধরুণ আপনার প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স বিষয়ে সরকার থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে বা এ নিয়ে মামলা হয়েছে। (এই উদাহরণটা ব্যবহার করছি কারণ এটা সবচেয়ে কমন ঘটনা, অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই এটা ঘটে।) আপনার প্রতিষ্ঠান সেই চিঠি বা মামলার বিরুদ্ধে আপিল করেছে। বিষয়টি একজন সাংবাদিক জেনে গেছেন এবং ফাইনান্স/অ্যাকাউন্টস বিভাগের কোনো কর্মকর্তা বা টপ ম্যানেজমেন্টের কারো সঙ্গে ফোনে যোগযোগ করেছেন মন্তব্যের জন্য। সেই কর্মকর্তা বা বড়কর্তা হয় নার্ভাস হয়ে অথবা না বুঝেই এবং কমিউনিকেশন বিভাগের সাথে পরামর্শ না করেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে ফেলেছেন বা বলেছেন যে এরকম চিঠি আসেনি বা মামলা হয়নি। অর্থাৎ মিথ্যা বলে ফেলেছেন। এক্ষেত্রে মিথ্যা বলা মস্ত বড় ভুল। সাংবাদিক যেহেতু ঘটনার খোঁজ জেনেছেন, তার মানে তাঁর কাছে কিছু প্রমাণ অবশ্যই আছে। মিথ্যা বলা মানে আপনার প্রতিষ্ঠানের ethics নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দেয়া। আপনি যাই বলুন না কেন, সাংবাদিকের কাছে যদি তথ্যপ্রমাণ থাকে, তাহলে তিনি নিউজ করবেনই। যদি আপনি মিথ্যা বলেন, তাহলে সেই নিউজে শুধু আপনি নন, আপনার প্রতিষ্ঠানও মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হবে। নিউজটা যখনই ছাপা হয়ে যাবে, সেটা পড়ে আপনার টপ ম্যানেজমেন্টের মাথা খারাপ হবে। আর ঠিক তখনই ডাক পড়বে কমিউকেশন বা পাবলিক রিলেশন্স ডিপার্টমেন্টের। কিন্তু ততক্ষণে তো নিউজটা ছাপা হয়ে গেছে। এক মিডিয়াতে ছাপা হওয়ার পর, অন্য অনেক মিডিয়াও সেটা নিয়ে নিউজ করে ফেলেছে। সোশাল মিডিয়াতেও চলে এসেছে।
এবারে আসি ঘটনাটা কিভাবে ম্যানেজ করা যেত সেই কথায়:
চিঠি পাওয়ার সাথে সাথে কমিউনিকেশন বিভাগকে জানালে প্রস্তুতি নেয়া যেত। অফিসের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তৈরি করে রাখা যেত। তখন কোনো সাংবাদিক যোগাযোগ করলে মিথ্যা বলতে হতো না।
সাংবাদিকের সাথে প্রথমেই কথা না বলে, সেই কর্মকর্তা তাঁর কাছ থেকে একটু সময় চেয়ে নিতে পারতেন। তারপর কমিউনিকেশনের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারতেন। কমিউনিকেশন সেক্ষেত্রে ওই সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করে সঠিক তথ্যটি দিতে পারতো, প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারতো।
যদি টিভি ইন্টারভিউ দেয়ার বিষয় থাকে, প্রয়োজনে সেই কর্মকর্তাকে সাংবাদিক সম্ভাব্য কি প্রশ্ন করতে পারেন এবং তার উত্তর কি হতে পারে সে বিষয়ে প্রস্তুত করে দিতে পারতো। মামলা বা চিঠির বিরুদ্ধে যদি আপিল করা হয়েই থাকে, তাহলে সেটা যতক্ষণ নিস্পত্তি না হচ্ছে ততক্ষণ তো আপনার প্রতিষ্ঠানকে দোষী বলা যাবে না। আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা standing statement-এ আপিলের কথাটা পরিস্কারভাবে উল্লেখ করলেই মিথ্যা বলার প্রয়োজন হতো না।
পালিয়ে থাকা ঠিক না
ক্রাইসিসের সময় সাংবাদিকদের ফোন না ধরা একটা মহাভুল। ইদানিং এটা অনেক দেখা যায়। সাংবাদিক একটা ঘটনা সম্পর্কে জেনে কোনো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছেন বা টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছেন, কিন্তু সেই শীর্ষ কর্মকর্তা হয় সময়ের অভাবে অথবা ইচ্ছা করে সেই ফোন রিসিভ করেননি কিংবা টেক্সট মেসেজের জবাব দেননি। সাংবাদিকও নিউজে লিখে দিয়েছেন যে অমুক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা ফোন ধরেননি বা টেক্সটের জবাব দেননি। এখানে দুটো ভুল আছে।
যিনি ফোন ধরেননি, তিনি হয়তো জানেন না বা বুঝতে পারেননি এ সময়ে কি বলতে হয়, তাই ফোন ধরেননি। নিউজে যখন লেখা হয় যে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষকর্তা ফোন বা মেসেজের জবাব দেননি, তখন মনে হয় প্রতিষ্ঠানের কিছু গোপন করার আছে, তাই ফোন ধরেনি। এসব ক্ষেত্রে ফোন ধরতে হবে বা টেক্সটের জবাব দিতে হবে অথবা তাৎক্ষণিকভাবে কমিউনিকেশন বা পাবলিক রিলেশন্স বিভাগকে জানাতে হবে। আপনি যদি না বোঝেন কি বলতে হবে, তাহলে সাংবাদিকের কাছ থেকে কিছুটা সময় চেয়ে নিতে হবে — সেটা হতে পারে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা, কিন্তু এর বেশি না। তারপর কমিউনিকেশনের সাথে পরামর্শ করে বক্তব্য ঠিক করতে হবে।
সাংবাদিকেরও ভুল আছে এখানে। তিনি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য জানার জন্য শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাকেই হয়তো ফোন দিয়েছেন। তাঁকে ফোনে না পেয়ে নিউজে লিখে দিয়েছেন যে তিনি ফোন ধরেননি। এতে মনে হয় ওই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা ইচ্ছা করে নিজের দোষ ঢাকার জন্য ফোন ধরেনি। ব্যপারটা সবক্ষেত্রে এমন নাও হতে পারে। একটি বড় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তার নানারকম ব্যস্ততা থাকে। অনেক সময় তাদের ফোন নিজের কাছে থাকেই না। সারাদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিটিংয়ের পর মিটিং করতে হয়। শত শত ফোন এবং টেক্সট মেসেজ আসে। কেউ কেউ অপরিচিত নম্বর হলে ফোন ধরেন না। সব বড় প্রতিষ্ঠানেই আলাদা কমিউনিকেশন, পাবলিক রিলেশন্স বা জনসংযোগ বিভাগ থাকে। তাদের কাজই হলো মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ রাখা। সেই শীর্ষ কর্মকর্তা সাংবাদিকের ফোন না ধরতে পারেন, কিন্তু জনসংযোগ কর্মকর্তার ফোন হয়তো ঠিকই ধরবেন। তাই শুধুমাত্র এমন একজনকে ফোন দেয়া (যার কিনা ফোন না ধরতে পারার হাজারটা valid কারণ আছে) এবং তারপর তাকে ফোনে না পেয়ে সেটা নিউজে লিখে দেয়াটা কোনো দক্ষ সাংবাদিকের কাজ হতে পারে না। আজকের এই digital connectivity-র যুগে, কোনো প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ বিভাগের কারো ফোন নম্বর জোগাড় করা কয়েক মিনিটের ব্যপার মাত্র।
মাথা ঠান্ডা রাখা
ক্রাইসিস ম্যানেজ করার জন্য মাথা ঠান্ডা রাখা সবচেয়ে জরুরি। যখন কোনো ক্রাইসিস ঘটে, তখন অফিসের টপ ম্যানেজমেন্টের সবেচেয়ে বেশি মাথা গরম হয়। যিনি যত উপরের পদে কাজ করেন, তাঁর মাথা তত বেশি গরম হয়। অনেকেই প্যানিক করতে শুরু করেন। ক্রাইসিসের সময় টপ ম্যানেজমেন্ট যদি প্যানিক করে, তাহলে সেটা নিজেই আরেকটা বড় ক্রাইসিস। বড়কর্তাদের প্যানিক ম্যানেজ করতে গিয়ে আসল ক্রাইসিস আরো বড় হতে থাকে। অনেক সময় প্যানিক থেকে বড়কর্তারা নিজেরা কিছু কাজ করে ফেলেন কমিউনিকেশনকে না জানিয়ে। সেগুলো কখনো কখনো ব্যাকফায়ার করে এবং নতুন আরেকটা ক্রাইসিসের জন্ম দেয়। তখন সেই ক্রাইসিসও ম্যানেজ করতে হয়। ক্রাইসিসের সময় মাথা ঠান্ডা রাখার দুটো উপায় নিয়ে নিচে আলোচনা করছি।
ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল
আপনার যদি একটা যথাযথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল থাকে, তাহলে আপনি ঠান্ডা মাথায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবেন। প্রোটোকল অনুযায়ি ব্যবস্থা নিলে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সহজ হয়। মাথা গরম বা প্যানিক শুরু হয় তখনি যখন আপনি বুঝতে পারেন না কি করবেন। প্রোটোকল থাকলে বুঝতে পারবেন কি করতে হবে, তখন মাথাও ঠান্ডা থাকবে। প্রোটোকলের মধ্যে যা যা অবশ্যই থাকতে হবে তা হলো:
মুখপাত্র: তাৎক্ষণিক একজন মুখপাত্র ঠিক করতে হবে। কারণ কঠিন পরিস্থিতিতে যদি প্রতিষ্ঠানের সবাই নিজের মতো কথা বলা শুরু করেন, মিডিয়াতে ইন্টারভিউ দেয়া শুরু করেন, সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট দেয়া শুরু করেন, তাহলে বিপদ বাড়বে। সুতরাং, একজন ব্যক্তিকে এ কাজের জন্য মনোনীত করাই সবচেয়ে নিরাপদ। মুখপাত্র ঠিক করার ক্ষেত্রেও ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন আছে। এমন কাউকে মুখপাত্র নির্বাচন করা ঠিক না যিনি কথা বলার সময় সহজেই মেজাজ হারাতে পারেন বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা প্রশ্নোত্তরে যা আছে, সেগুলোর বাইরে কিছু বলে ফেলতে পারেন। অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তাকে (যেমন সিইও,এমডি, ইডি, ইত্যাদি) মুখপাত্র বানানোও ঠিক না, কারণ তাঁরা অন্য ব্যস্ততার কারণে সবসময় অ্যাভেইলেবল নাও থাকতে পারেন। কমিউনিকেশন বিভাগের ঠান্ডা মাথার সিনিয়র কাউকে মুখপাত্র মনোনীত করাটাই সবচেয়ে নিরাপদ।
Standing Statement বা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য: Standing Statement হতে হবে খুব মাপা, ইংরেজিতে যাকে বলে concise – বাড়তি কোনো কথা বলা যাবে না। ঘটনা সম্পর্কে জানার সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে এটা তৈরি করে ফেলতে হবে এবং মনোনীত মুখপাত্র নির্বাচন করে ফেলতে হবে। বক্তব্যটি সিনিয়র ম্যানেজমন্টের সাথে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেইলে শেয়ার করে দ্রুত অ্যাপ্রুভাল নিয়ে নিতে হবে, যাতে সময় নষ্ট না হয়। Standing statement যত concise হবে, যত কম কথা থাকবে, সিনিয়র ম্যানেজমেন্টেরও তত কম সময় লাগবে সেটা দেখে approve করতে। নিচে একটা উদাহরণ দিয়েছি উপরের ট্যাক্স বিষয়ক কাল্পনিক ঘটনার সাথে মিল রেখে। আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তৈরি করার সবচেয়ে সহজ ফর্মুলা হলো কোনো মন্তব্য না মতামত না দেয়া। এখানে দেখুন, শুধুমাত্র “ফ্যাক্ট” বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপনার প্রতিষ্ঠান কি ভাবছে বা অভিযোগটি সত্য না মিথ্যা, সে সংক্রান্ত কোনো কথা এখানে নেই। “গত ১৮ই মে আমরা একটা চিঠি পেয়েছি। সেই চিঠি পাওয়ার পরপরই আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে আপিল করেছি। আপিলটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। বিষয়টি এখনো কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন আছে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পেলে আরো বিস্তারিত বলতে পারবো।”
সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর: সাংবাদিকরা করতে পারেন এমন কিছু সম্ভাব্য প্রশ্ন এবং সেগুলোর উত্তর তৈরি করে রাখতে হবে। আপনার যদি সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে কাজটা সহজ। যদি না থাকে তাহলে সাংবাদিকের মতো করে ভাবতে হবে: “আপনি সাংবাদিক হলে কি কি প্রশ্ন করতেন”। যত বেশি প্রশ্নের উত্তর তৈরি করতে পারবেন, তত ভালোভাবে মুখপাত্রকে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করতে পারবেন। উত্তরগুলো লেখারও একটা খুব সহজ ফর্মুলা আছে: বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তরে standing statement-এ যা লিখেছেন সেটুকুই কমবেশি ব্যবহার করতে হবে, এর বাইরে যাওয়া যাবে না। যেই প্রশ্নের উত্তর standing statement থেকে পাওয়া যাবে না, সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
মুখপাত্রকে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করা: মুখপাত্রকে প্রস্তুত করে দিতে হবে যেন তিনি standing statement এবং সম্ভাব প্রশ্নোত্তরের বাইরে কোনো কিছু না বলেন। তাঁকে রিহার্সেল করাতে হবে। সম্ভব হলে সম্ভাব্য প্রশ্ন এবং উত্তরগুলো মুখস্ত করিয়ে দিতে হবে। স্ট্যান্ডিং স্টেটমেন্ট বা সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তরটির সফট কপি তাঁর সাথে শেয়ার করতে হবে, যাতে তিনি প্রয়োজনে মোবাইল ফোনে দেখেই উত্তর দিতে পারেন। সঙ্গত কারণেই এসবের প্রিন্টআউট না নেয়াই ভালো।
Rejoinder বা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ: যে নিউজটি ছাপা হয়েছে বা অন এয়ার হয়েছে, সেটি যদি আসলেই ভুল হয় বা তাতে যদি কোনো ভুল তথ্য থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক যেই মিডিয়াতে নিউজটি ছাপা হয়েছে, সেখানে একটি প্রতিবাদ বা rejoinder পাঠাতে হবে। এটা যত দ্রুত সম্ভব করতে হবে। যেদিন সংবাদ ছাপা হয়েছে, তার পরদিনই আপনার প্রতিবাদ ছাপা হলে সবার ভালো মনে থাকে। টিভি চ্যানেল হলে নিউজ অন এয়ার হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবাদ পাঠিয়ে দিতে হবে। দেরি করলে নিউজের গুরুত্ব কমে যায়। আমি অনেক প্রতিষ্ঠানকে দেখেছি অদ্ভুত জটিল ভাষায়, লম্বা লম্বা rejoinder পাঠাতে। আপনি যত লম্বা ও জটিল rejoinder পাঠাবেন, তাতে কাজ হবে তত কম। কারণ rejoinder পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য হলো সাংবাদিক যে নিউজটি করেছেন, সেটাতে যে ভুলগুলো আছে, তা ধরিয়ে দেয়া। ভুল ধরিয়ে দিতে হলে পাল্টা তথ্যপ্রমাণ দিতে হবে যাতে পাঠকরা বুঝতে পারেন যে আপনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সঠিক নয়। অপ্রয়োজনে ভাষা জটিল করলে বা লম্বা করলে সাধারণ পাঠকরা বুঝতে পারবেন না, তাতে আপনার প্রতিষ্ঠানের অবস্থানও পরিষ্কার হবে না। আমার অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, আইনজীবীকে দিয়ে rejoinder লেখালে সেটা জটিল ও লম্বা হয়ে যায়। সঠিক উপায়টি হলো আগে কমিউনিকেশন বিভাগকে দিয়ে rejoinder-টি তৈরি করানো, এবং তারপর আইনজীবীকে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেয়া যে সেখানে সমস্যাযুক্ত কিছু আছে কিনা। যদিও এটা প্রতিবাদপত্র হিসেবেই পাঠাতে হবে, মিডিয়া কিন্তু সেটা ছাপাবে বা অন এয়ার করবে সংবাদ হিসেবেই। খবর কিভাবে লিখতে হয় সেটা কমিউনিকেশন ভালো বোঝে, আইনজীবী নন।
মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়া মনিটরিং: মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়াতে আপনার ঘটনাটি নিয়ে কি ধরনের খবর ছাপা হচ্ছে এবং সোশাল মিডিয়াতে কি ধরণের আলাপ হচ্ছে তা মনিটরিংয়ের জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তিকে assign করে দিতে হবে। কোনো কোনো ঘটনা দ্রুত পাল্টাতে থাকে বা evolve হতে থাকে। তার সাথে up-to-date থাকতে হবে। প্রয়োজনে standing statement এবং প্রশ্নোত্তর update করতে হবে।
প্রিন্ট, অনলাইন বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে কোনো খবর ভুল খবর ছাপা হলে তার জন্য কি ব্যবস্থা নিতে হয় তার বিস্তারিত উপরে লিখেছি। কিন্তু, সোশাল মিডিয়ার জন্য এরকম কোনো ব্যবস্থা নিয়ে লাভ হয় না, কারণ সোশাল মিডিয়া ক্রাইসিস আসলে ম্যানেজ করা যায় না। এ বিষয়ে বিস্তারিত নিচে লিখেছি।
সোশাল মিডিয়া ক্রাইসিস
আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সোশাল মিডিয়া ক্রাইসিস ম্যানেজ করা যায় না। বাংলাদেশে ফেইসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটির মতো। সুতরাং, এত মানুষ ফেইসবুকে কি লিখছে, পড়ছে, দেখছে, পোস্ট করছে বা শেয়ার করছে, তা কোনোভাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। সোশাল মিডিয়ায় সব ইস্যুরই একটা lifespan বা জীবনকাল আছে, সাধারণত সেটা এক সপ্তাহের মতো হয়ে থাকে। একটা ইস্যু নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি শোরগোল থাকে না। নতুন কোনো ইস্যু সামনে এলে মানুষ আগেরটা ভুলে যায়। সুতরাং, সোশাল মিডিয়াতে কোনো নেগেটিভ জিনিস ভাইরাল হয়ে গেলে সেটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পাল্টা কন্টেন্ট দিয়ে কোনো লাভ নেই। উল্টো, আপনি যে কন্টেন্ট দেবেন, সেটার নিচে আরো হাজার হাজার নেগেটিভ কমেন্ট আসবে, সেগুলো দেখে যাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না, তারাও জেনে যাবেন। তাই এই সময়টা চুপচাপ পার করে দেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এটা মেনে নিতে হবে এবং সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে বিষয়টা বোঝাতে হবে।
মিডিয়ার সাথে সম্পর্ক
সোশাল মিডিয়ার তুলনায় মিডিয়া ক্রাইসিস ম্যানেজ করা সহজ। সাংবাদিকরা একটা বৃহত্তর কমিউনিটির অংশ। তাদের সাথে যোগাযোগ করা এবং প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ব্যাখ্যা করাও খুব একটা কঠিন না। যুক্তি এবং সঠিক তথ্যপ্রমাণ দিয়ে বোঝালে সাংবাদিকদের না বোঝার কোনো কারণ নেই কোনটা গুজব আর কোনটা সত্য। আপনার যদি সাংবাদিক মহলে ভালো বন্ধুত্ব, নিয়মিত যোগাযোগ এবং ভালো পরিচিতি থাকে, তাহলে যেকোনো ক্রাইসিসের সময় নিউজ ছাপা হওয়া বা অন এয়ার হওয়ার আগে আপনার সাথে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করবেন। অর্থাৎ, সাংবাদিক মহলে মোটামুটি জানা থাকতে হবে যে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের কমিউনিকেশন দেখেন, তাদের কাছে আপনার ফোন নম্বর থাকতে হবে। “অমুক প্রতিষ্ঠানের কমিউনিকেশন দেখেন তমুক ভাই। নিউজটা করার আগে তাঁকে একটা ফোন দিয়ে দেখি তাদের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আছে কিনা।” এটা যদি নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে অনেক সম্ভাব্য মিডিয়া ক্রাইসিস আগে থেকেই ম্যানেজ করতে পারবেন।
ভুল যদি হয়েই যায়
আপনার প্রতিষ্ঠান যদি আসলেই কোনো ভুল করে থাকে এবং সেটা যদি মিডিয়া বা সোশাল মিডিয়াতে চলেই আসে তাহলে প্রথমেই ভুলটা স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেয়া ভালো। আপনার যারা loyal customer, তাদের কাছে এতে একটা পজিটিভ বার্তা যাবে। আমার অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি যে, ভুল অস্বীকার করলে বা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে কোনো লাভ হয় না। একবার যদি সেটা মিডিয়াতে চলে আসে, তাহলে আর তাকে মিথ্যা বলে আটকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। যত আপনি অস্বীকার করবেন, মানুষ তত অবিশ্বাস করবে। এটা আমার তৈরি করা কোনো কনসেপ্ট না – সামাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, যে প্রতিষ্ঠান যত বড় এবং যত সফল, তার বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে পড়লে তা তত সহজে মানুষ বিশ্বাস করে। গুজব অনেকটা ভাইরাসের মতো, তাই সহজেই ভাইরাল হয়। সুতরাং, প্রথমেই যদি আপনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন, তাহলে আর সেটা গুজব হয়ে উঠতে পারবে না। এ সংক্রান্ত বেশ অনেকগুলো theory আছে যেমন Schadenfreude, Relative Deprivation Theory, Just-World Hypothesis, Anti-Corporate Sentiment, Social Comparison Theory, Confirmation Bias, Cognitive Dissonance, ইত্যাদি। এসব নিয়ে পড়াশোনা করে দেখতে পারেন, তাতে human psychology এবং অন্যান্য অনেক বিষয় কখন, কিভাবে এবং কেন ঘটে সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন। তখন ক্রাইসিস ম্যানেজ করতেও সুবিধা হবে।
সেলসের ভূমিকা
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার আলোকে আমার মনে হয়েছে ক্রাইসিস ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন, মার্কেটিং এবং সেলসের একসঙ্গে কাজ করাটা খুব জরুরি। কিছু ক্রাইসিস সেলস টুলস দিয়েও ম্যানেজ করা যায়। সেলস বাড়ানোর বিভিন্ন টেকনিক আছে যেমন ডিরেক্ট সেলস, সেলস প্রোমোশন, ইত্যাদি। বড় কোম্পানী এবং প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড হলে, ব্যবসা যদি সাময়িকভাবে কমেও যায়, একটা সময় পর্যন্ত সেটার ধাক্কা সামলে নিতে পারা উচিৎ। ঝড় কেটে গেলে আবার সেলস বাড়ানোর দিকে নজর দেয়া যেতে পারে।
মার্কেটিংয়ের ভূমিকা
মার্কেটিংও ভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারে। যে বিষয় নিয়ে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে, সেটা নিয়ে কমিউনিকেশন না করে অন্যদিকে ফোকাস করা যেতে পারে। যেমন, যেসব কারণে (প্রোডাক্টের কোয়ালিটি, কনজিউমারের আস্থা, ইত্যাদি) কোম্পানীটি বড় ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে, সেসব বিষয়ে ফোকাস করে marketing communication plan করা যেতে পারে। যে বিষয় নিয়ে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে, সেই বিষয় নিয়েই যদি কন্টেন্ট তৈরি করেন, তাহলে আপনি নিজেই সেই বিষয় আরো নেগেটিভ কথা বলার ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছেন। সব ক্রাইসিসেরই একটা lifespan আছে, কোনোটাই আজীবন থাকে না। তাই, কখনো কখনো চুপ করে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। বরঞ্চ প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ডের শক্তির জায়গাগুলো নিয়ে indirect marketing techniques ব্যবহার করে কাজ করা যেতে পারে। এতে তাৎক্ষণিক ফল হয়তো পাওয়া যাবে না, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে লাভ হতে পারে কারণ যত বড় ক্রাইসিসই হোক, একসময় গিয়ে সেটা ঠান্ডা হয়ে আসবে। তখন আবার এই শক্তির জায়গাগুলোর কারণেই loyal customer-রা ফিরে আসবে।
ক্রাইসিস কমিউনিকেশনের মেসেজ
ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে খুব বেশি ক্রিয়েটিভ না হওয়াই ভালো। উপরে standing statement-এর যে উদাহরণটা দিয়েছি, সেখানে দেখবেন কোনো ধরণের ক্রিয়েটিভিটি নেই। একদম সহজ-সরল, mundane কথাবার্তা, কোনো চালাকি নেই। ক্রাইসিস ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ আইডিয়া নিয়ে এগোনো অনেকটা জুয়া খেলার মতো – লেগে গেলে ভালো, কিন্তু যদি না লাগে, তাহলেই মহাবিপদ। তাই, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সময় নিয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ক্রাইসিস সিরিয়াস বিষয়, তাই ক্রাইসিস কমিউনিকেশনের message-ও হতে হবে সিরিয়াস। চটুল বা funny কন্টেন্ট দিয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজ করতে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ক্রাইসিস যত সিরিয়াস, ম্যানেজ করা তত কঠিন। রাতারাতি কোনো সিরিয়াস ক্রাইসিস ম্যানেজ করা যায় না। সময় নিয়ে শর্ট, মিডিয়াম এবং লং টার্ম প্ল্যানিং করতে হয়। কখনো কখনো চুপ থাকাই শ্রেষ্ঠ পন্থা – কিছু বলতে গিয়ে একটা ভুল শব্দ বলে ফেললেই পরিস্থিতি চক্রবৃদ্ধি হারে খারাপ হতে থাকবে।
প্রশিক্ষণ
প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি, বিশেষ করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। বিশ্বের সব বড় বড় প্রতিষ্ঠানই নিয়মিত তাদের বড়কর্তাদের জন্য মিডিয়া ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে থাকে যার মধ্যে থাকে camera training এবং hotseat training। বাংলাদেশেও এসব ট্রেনিং হয়। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীদের জন্য নিয়মিত কমিউনিকেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এমন কিছু না করা তাদের দায়িত্ব। কোনো ক্রাইসিস চলাকালীন সময়ে এই ট্রেনিং করানো যাবে না। এটা করাতে হবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, এবং কিছুদিন পরপরই এই ট্রেনিং (refresher) করাতে হবে (হতে পারে বছরে একবার) যাতে কর্মীরা তাদের দায়িত্ব ভুলে না যান।
তথ্যপ্রমাণ
গুজব বা অভিযোগ ভুল প্রমাণ করার ক্ষেত্রে এভিডেন্স বা তথ্যপ্রমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যপ্রমাণ শক্ত হতে হবে, দুর্বল তথ্যপ্রমাণ নিয়ে পাবলিক স্টেটমেন্ট না দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
উপসংহার
আগে থেকে যথাযথ প্রস্তুতি নেয়া থাকলে যে কোনো ক্রাইসিস ম্যানেজ করা সম্ভব, সেটা যত বড়ই হোক না কেন। প্রথমে ছোট মনে হলেও, যে কোনো ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে বড় ক্রাইসিসে রূপ নিতে পারে। সুতরাং, কোনো ঘটনাকেই হালকাভাবে নেয়া যাবে না। প্রতিষ্ঠান যত বড়, ক্রাইসিস তৈরি হওয়ার ঝুঁকি তত বেশি। এই সোশাল মিডিয়ার যুগে যে কোনো সময় যে কোনো কিছু ক্রাইসিসে রূপ নিতে পারে। আপনি সতর্ক হওয়ার বা প্রস্তুতি নেয়ার কোনো সুযোগই হয়তো পাবেন না। তাই সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই বু্দ্ধিমানের কাজ।
লেখক: রাজীব ভৌমিক, পরিচালক, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ