শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৪Dedicate To Right News
Shadow

মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারী নাহিদের কবিতা “অপারগতার গ্লানি”

Spread the love

(উৎসর্গ: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে সফল হলো সেইসব ছাত্রদের প্রতি)

 

আমায় একমুঠো সেই ধুলো মেখে দাও,

যেখানে লুটিয়ে পড়েছিল সাঈদ।

এক রাশ অক্সিজেন রেখে দাও,

যা শেষ মুহূর্তে নিয়েছিল মুগ্ধ।

আমাকে সেই বুলেটটা এনে দাও,

যা করেছিল ফাইয়াজকে স্তব্ধ।

আমি তা নিয়েই সান্ত্বনা নিব,

আর নিজেকে ধিক্কার দিব,

অপারগতার গ্লানি নিয়ে।

 

প্রতিবাদী সাঈদের হাতে যে লাঠিটা ছিল,

কেউ কি আমায় এনে দিতে পার?

আমি অপার যত্নে রেখে দিব।

যদি কোন দিন বিজয় আসে…

আমি ছুটে যাব উদ্ধত নিশান নিয়ে।

অসাম্প্রদায়িক সেই কেতন হাতে ছুটে বেড়াবো সব রাজপথ।

 

যেখানে শ্লোগানে মুখরিত ছিল অধিকার আদায়ের।

যেখানে অবলীলায় পড়ে ছিল অসংখ্য ধর্মনিরপেক্ষ লাশ।

আমি ছুটে যাবো সেই অন্ধকারে,

যেখানে সবকিছু নিভিয়ে নির্বিচারে চলেছিল গুলি।

আমি অক্লান্ত পথ হারাবো সেই পথে,

যেখানে সঙ্গীর তৃষ্ণা মেটাতে “পানি লাগবে”

বলতে বলতে লুটিয়ে পড়েছিল অকুতোভয় সৈনিক।

 

আমি আকাশের বুকে এঁকে দিব ক্ষুব্ধ অভিযোগ-

কি দোষ ছিল ফুটফুটে রিয়া’র?

যাকে বাবার কোলেই করেছিল নিথর হ্যালিকপ্টারের বৃষ্টির বুলেট।

আমি ছুটে যাবো প্রতিটি ঠাসা কারাগারে,

যেখানে ভরে আছে সহযোদ্ধার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া হাজারো মুক্তিকামী বন্দি।

আমি প্রবল শক্তি নিয়ে,

প্রকাশ্যে আনবো প্রতিটি ঘাতকের মুখ।

সেই অমানুষকেও,

যে ট্যাঙ্কের উপর থেকে চরম নির্মমতায়

টেনে হিঁচড়ে ফেলে দিয়েছিল মৃত্যুন্জয়ী ইয়ামিনের অর্ধমৃত লাশ।

কিংবা যে চেপে ধরেছিল বৈষম্য বিরোধী যোদ্ধার প্রতিবাদী চোয়াল।

 

আমি চিৎকার করে খুঁজে বেড়াবো প্রতিটি গণকবর,

যেখানে হাহাকার বুকে চেপে ঘুমিয়ে আছে সাঈদ, মুগ্ধ, ফাইয়াজ, ইয়ামিন, রুদ্র, দীপ্ত-সহ জুলাইয়ের অগণিত  শহীদ।

আর অনেক আদরে ওদের কানে কানে বলবো-

“স্বাধীনতা এসেছে,

স্বাধীনতা এসেছে।”

 

(রচনাকাল: ১ অগাস্ট ২০২৪, গোড়ান, ঢাকা)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *