ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মূল লক্ষ্যে এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এটা যদিও কোন সহজ কাজ নয় তবে তা সম্ভব। তিনি বলেন, এই তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমেই আগামীতে দেশটা হবে বৈষম্যহীন সমাজ যেখানে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার বিকালে (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘পাবলিক স্পিকিং অফিসিয়াল’ এর যৌথ উদ্যোগে এসএস গ্রুপ প্রেজেন্টস “দেশসেবা লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৪” প্রদান অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৪টি জনসেবামলক প্রতিষ্ঠান এবং ৫৪ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে সম্মানিত করা হয়। বিশেষ করে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ, শিশু খাদ্য ও মেডিকেল সামগ্রী প্রদানে কার্যক্রম করার জন্য। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব ড. জামিল আহমেদ এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক মিজান রহমান, এসএস গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক আমান উল্লাহ। অনুষ্ঠানে অডিও বক্তব্য দেন সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন ) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ভিডিও বক্তব্য দেন লুটন যুক্তরাজ্যের জাতিসংঘ সমিতির সেক্রেটারী ড. ডেভিড চিজম্যান। অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করেন এসএস গ্রুপ, পরিচালনা করেন এম. সাফাক হোসেন ও ‘পাবলিক স্পিকিং অফিসিয়াল’ এর ফাউন্ডার মোঃ সোলায়মান আহমেদ জিসান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা যে কর্তৃত্ববাদের পরাজয় দেখলাম তার মূলে ছিলো দুর্নীতি ও দুঃশাসন। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে সম্পদের পাহাড় গড়াই ছিলো তাদের উদ্দেশ্য। যেখানে জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা ছিলোনা। ছিলো প্রশাসনে দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের ছড়াছড়ি। আর এগুলোর প্রতিবাদ করতে যেয়ে বিভিন্ন ধরনের চড়াই উৎরায় পার হতে হয়েছে। আর এ সকলের বিরুদ্ধে কথা বলতে যেয়ে তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছিল।
তিনি বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার লক্ষে সবাইকে কাজে লাগিয়ে তা এগিয়ে নিতে হবে। কারণ পৃথিবীতে অনেক বিপ্লব হলেও আমাদের দেশের ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী বিপ্লব পৃথিবীতে বিরল।
তিনি আরো বলেন, যে সকল প্রতিষ্ঠান জনগণের জন্য কাজ করার কথা তা যথাযথভাবে না করে ব্যক্তি-দলের স্বার্থে করেছে। আর সে কারনে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আমাদের অস্তিত্বকে ভুলতে বসে ছিলাম। এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় পথ দেখিয়েছে তরুন সমাজ।
বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, এই দুর্যোগের সময় আমাদের দেশের তরুণরা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন। আজকে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে যে ১৪টি প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি পেলেন তা জাতির পক্ষ থেকে সামান্য। আজকের এই অনুষ্ঠান থেকে আহবান জানাবো জাতির যে সকল চ্যালেঞ্জ আসবে তার সম্মিলিত হবে মোকাবেলা করতে হবে।
এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার এম. সাফাক হোসেন বলেন, যুব সমাজ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে বন্যার ক্ষেত্রেও তাদের অবদান রয়েছে। যা আমরা কখনোই ভুলতে পারবো না। ভবিষ্যতে আরো যেন কাজ করতে পারে আমাদের সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
জামিল আহমেদ বলেন, তরুণ প্রজন্ম নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে রাস্তায় নেমে এসেছে। তাদেরকে কেউ বলে নাই ট্রাফিক সিগনাল নিয়ন্ত্রণ করতে। তারা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন। আমরা যাতে ছাত্রছাত্রীদের সাহসী ভূমিকা ধরে রাখতে পারি তা একান্ত প্রত্যাশা। দেশ ও জাতির কল্যাণে এভাবে ভবিষ্যতেও এগিয়ে আসতে হবে।
মিজান রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কতটা ঐক্যবদ্ধ তা আমরা দেখেছি ১৯৭১ এবং ২০১৪ সালে। খুব অল্প সময়ের সুশৃঙ্খল ভাবে এগিয়ে এসেছে তরুণরা যা দেশ গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।