শনিবার, এপ্রিল ২০Dedicate To Right News
Shadow

বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল সাম্য সমাজের বীজ বপন করে গেছেন: মোস্তাফা জব্বার

Spread the love


ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলা ও বাঙালীর একমাত্র স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি তিনি সোনার বাংলা গড়ার দর্শনের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করছেন। একদিকে বঙ্গবন্ধু ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি প্রযুক্তি নির্ভর, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতা নির্ভর সোনার বাংলা গড়ার সর্বাত্মক চেষ্টা গ্রহণ করেন অন্যদিকে দ্বিতীয় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শোষন-বঞ্চনাহীন একটি সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করে গেছেন।

মন্ত্রী ৩১ আগস্ট রাতে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পোস্ট অফিস কর্মচারি ইউনিয়ন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের পরাধীন বাঙালি জাতির মুক্তির মহানায়ক। অপরদিকে মাত্র তিন বছর সাত মাসে তার শাসনকাল ছিল বাঙালীর অর্থনৈতিক মুক্তির সোপান । তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা, ভূমি ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে তার গৃহীত কর্মসূচিগুলো ছিলো আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি। বাঙালি ভাগ্যবান তার মতো একজন মহান নেতা পাওয়ার জন্য। যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের মধ্যেও জাতীয় প্রবৃদ্ধি শতকরা সাত ভাগে তিনি উন্নীত করে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যাত্রা শুরু করেছিলেন।

মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু রাজনীতির সাথে অর্থনীতিকে সম্পৃক্ত করেছেন উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মূল্যায়ন করলে তাকে মূল্যায়ন করতে হবে- শোষিত বঞ্চিত মানুষের পাশে তার দৃঢ় অবস্থানকে দিয়ে ।বঙ্গবন্ধু প্রচলিত ধারণা বদলে দিয়ে বাংলা ভাষা ভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করায় পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দোসর এবং সাম্রাজ্যবাদী আন্তর্জাতিক পরাশক্তি এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনি বলেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করেছে।বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির বড় সম্পদ। বিশ্বে অনেক রাজনীতিক দেখেছি আমরা কিন্তু একজন বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা খুঁজে পাওয়া দুস্কর, বলেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার। স্বাধীনতা সংগ্রাম, দেশপ্রেম কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর সাথে তুলনা করার মতো একজনও নেই বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে সত্তরের নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রামের পথবেয়ে একাত্তরের জনযুদ্ধ ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

বঙ্গবন্ধুর মতো দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্র নায়ক যুগে যুগে আসেন না উল্লেখ করেন মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ, ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, এমনকি খুলনার ক্যাবল শিল্প প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই হয়েছে। সুদীর্ঘকাল আগে কী করে বঙ্গবন্ধু আজ ও আগামী দিনের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবলেন এবং এই সব প্রতিষ্ঠান ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন তা অভাবনীয়।ষাটের দশকে রাজপথে ছাত্র লীগের লড়াকু সৈনিক জনাব মোস্তাফা জব্বার বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা তুলে ধরে বলেন, ইয়াহিয়া খানের লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্কের অধীনে অভ্যন্তরিণ বিরোধীতা সত্ত্বেও সত্তরের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ ছিল বঙ্গবন্ধুর দৃরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্তের ফসল। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধকে বিচ্ছিন্ন আন্দোলন বলার সুযোগ ছিল না। সত্তুরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নিরঙ্কুশ বিজয়ে পুরো দেশের সকল জনতা এক হবার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাঙালির এই যুদ্ধে ব্যাপক সমর্থন প্রদান করে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও মাত্র সাড়ে তিন বছরে যেসব বড় কাজ তিনি করেছেন তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকায় আমি এ পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসেবে একশত পঞ্চান্নটি বিশেষ উদ্যোগ পেয়েছি। আর আজকের বাংলাদেশ এই ভিত্তির ওপর ভর করেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী স্বাধীনতার সংগ্রামে ৮টি স্মারক ডাকটেকেট প্রকাশসহ ডাক বিভাগের গৌরবোজ্জ্বল বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে দুইশতাধিক ডাক কর্মচারি শহীদ হয়েছেন। তাদের উত্তরসূরি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠায় মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় চলমান সংগ্রামের সৈনিক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন যে সরকার ডাক বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং সেজন্য একে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এজন্য ডাক কর্মচারীদেরকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ পোস্ট অফিস কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান এমপি, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ পোস্ট অফিস কর্মচারি ইউনিয়নের মহাসচিব খলিলুর রহমান ভূঞা বক্তৃতা করেন।

ড.আবদুস সোবহান গোলাপ বঙ্গবন্ধুর জীবনের ঘটনা বহুল তথ্য তুলে ধরেন।তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালীত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *