ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, নারীর ডিজিটাল নিরাপত্তা সুরক্ষা কিংবা নিরাপত্তায় আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা অপরিহার্য। তা না হলে যত বেশি ডিজিটাল হবো সমাজের দুর্বল অংশ বিশেষ করে নারী ও শিশু বিপন্ন থেকে আরো বিপন্নতর হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড-এর দোহাই দিয়ে প্রতিকারে খুব কমই গুরুত্ব দিচ্ছে। পরিস্থিতি উত্তরণে বিশ্বের বহুদেশ সোস্যাল মিডিয়া আইন করেছে।
মন্ত্রী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সঠিক ও সক্রীয়ভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে নারী ও কন্যা শিশুর ওপর ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে আরও কার্যকর উদ্যোগ বিষয়ক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, এনডিসি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা এবং মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছে সব বয়সী নারী সমাজ। লক্ষ্য করা যায় মেয়েদের ছবি সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে বা অসৎ উপায়ে সংগ্রহ করে তাদের ছবি ডিজিটাল মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে তা ভাইরাল করা হয়। এই ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।এটি করা সম্ভব বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল অপরাধ দমনে আইন প্রণয়ন অপরিহার্য ছিলো। কিন্তু আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো বিশেষ করে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ও ডিজিটাল ডিভাইস শনাক্ত যন্ত্র থানাগুলোতে না থাকায় ক্ষেত্র বিশেষে আইনটির অপপ্রয়োগ হতেই পারে। এই অবস্থা উত্তরণে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নারীদের সাধারণ ও ডিজিটাল মাধ্যমে নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক আন্দোলনের বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে । এছাড়া বাংলাদেশের বাইরে থেকে প্রায় দেড় শতাধিক আইডি থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও উস্কানিমূলক এবং বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার করা হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে সোস্যাল মিডিয়া এদের প্রশ্রয়ও দিচ্ছে, প্রতিকারের জন্য খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য দিকে স্বাধীনতার পক্ষে মতামত কোন কোন ক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যম গুলোতে জায়গা পায় না। তবে গত তিন বছরে ফেসবুকসহ অন্যদের সাথে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরি করা চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় ডা. ফাওজিয়া মুসলেম বলেন, নারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে মহিলা পরিষদ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ অবস্থা্ন থেকে তা পালন করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে সচেতন না হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হার বাড়বে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
এর আগে মন্ত্রী হাইটেক প্রফেশনাল নামক কম্পিউটার কোম্পানীর রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বছরব্যাপি অনুষ্ঠানমালা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।