সোমবার, জানুয়ারি ১৩Dedicate To Right News
Shadow

দেশের তরুণ প্রজন্মের উন্নয়নে পরিচালিত প্রোগ্রাম নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গবেষণা প্রতিবেদন

Spread the love

ব্রিটিশ কাউন্সিল ও লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে গতকাল (১১ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ কাউন্সিলের মিলনায়তনে ‘নন-ফর্মাল এডুকেশন ফর ইয়ুথ-লেড চেঞ্জ: ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে তরুণ প্রজন্মের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের ওপর সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়।

ব্রিটিশ কাউন্সিল ও লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত গবেষণাটিতে অর্থায়ন করেছে ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের (ইউকেআরআই) আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিস রিসার্চ কাউন্সিল (এএইচআরসি)। গবেষণায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘লিডারশিপ ফর অ্যাডভান্সিং ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (লিড বাংলাদেশ)’ প্রকল্প নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেখানে তরুণদের ক্ষমতায়ন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রচার এবং তরুণ নেতৃত্বাধীন পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে প্রকল্পটির ভূমিকা তুলে ধরা হয়।

লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামটি কীভাবে প্রয়োজনভিত্তিক ও প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণ মডিউলের মাধ্যমে তরুণ নেতৃত্বাধীন সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এ ব্যাপারে প্রতিবেদনে সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়। সক্রিয় নাগরিকত্ব, লৈঙ্গিক সমতা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) গুরুত্বারোপ করে পরিচালিত প্রোগ্রামটির সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এর অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রম। এছাড়াও, গবেষণায় তরুণ নেতৃত্বাধীন সামাজিক কর্ম প্রকল্পগুলোর (এসএপি) গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা তাত্ত্বিক জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। গবেষণায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও চিহ্নিত করা হয়; যার মধ্যে রয়েছে: তরুণদের সাথে সম্পৃক্ততা ও তাদের উৎসাহ প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নীতিনির্ধারকদের সাথে যোগাযোগ, কমিউনিটির সংশয়, সম্পদের অপ্রতুলতা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়। পাশাপাশি, এতে প্রোগ্রামের সময় বাড়ানো, এসএপি বাজেট বৃদ্ধি, ফলো-আপ ও মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, অতিরিক্ত এসডিজি লক্ষ্য যুক্ত করা, ধারাবাহিকভাবে বিস্তৃত পরিসরে শেখার পরিবেশ তৈরি সহ মান উন্নয়ন সহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তিনি তরুণদের শক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তরুণদের উন্নয়নে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস; লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পলিটিকস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ড. কেটি হজকিনসন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভাষা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “ব্রিটিশ কাউন্সিলের লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামের ওপর এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তরুণদের উন্নয়ন কার্যক্রমের রূপান্তরমূলক শক্তিকেই তুলে ধরে। আমরা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করেছি, যা তাদের নিজ নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রেখেছে। তবে, এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে এবং বাংলাদেশের তরুণদের ক্ষমতায়নে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলে আমরা আমাদের অংশীদারদের সাথে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ড. কেটি হজকিনসন গবেষণার ফলাফল বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন। এরপর অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের নন-ফর্মাল এডুকেশন (এনএফই) টিম প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন এবং গবেষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়, যেখানে বাংলাদেশে তরুণদের উন্নয়নের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো—যেমন কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা, গণতান্ত্রিক শাসন ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততার মত বিষয়গুলোতে আলোকপাত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *