
বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯.২৫ মিনিটে প্রচারিত হবে বিশেষ নাটক “নিতুর ডায়েরি”। নাটকের গল্প দীপু মাহমুদ, রচনা হাসি ইকবাল ও পরিচালনা করেছেন সুজন বড়ুয়া।
নাটকে দেখা যাবে- ১৯৭১ সালে লেখা এই ডায়েরি ১২/১৩ বছরের কিশোরী নিতুর নিজ হাতে লেখা একটি মুক্তিযুদ্ধ দলিল । এই ডায়েরিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ প্রোক্ষাপটই উঠে এসেছে। নিতু প্রতিদিন ডায়েরি লিখতো তারিখ, দিন ও সাল সহকারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পরিবারে ও আশেপাশে এমনকি দেশের মধ্যে কি ঘটতো সে সেটা খুব যত্ন সহকারে ডায়েরির পাতায় তুলে ধরেছিল।
ওবায়েদ ছিলেন নিতুর বাবা। তিনি কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। তার দোকানে কাজ করতো আমবেল। আমবেল সম্পর্কে তার ফুফাতো ভাই হয়। সে খুব রসিক ও বুদ্ধিসম্পন্ন ছেলে ছিল। নিতুর একমাত্র বড় ভাই ছিল আশু যাকে নিতু মিভাই বলে
ডাকতো। তার বড় বোন ছিল মিতু। যে ছিল অত্যন্ত চালাক ও সাহসী মেয়ে। মিতু যুদ্ধের সময় তার বড় ভাই আশু ও আমবেলের সহযোগীতায় পাশের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র চালানোর ট্রেনিং নিয়েছিল। নিতুর মা ছিলেন একজন গৃহিনী।
নিতুর ডায়েরিতে দুইজন রাজাকার চরিত্র উঠে এসেছে একজন হলেন তার আপন মামা লতিফ ও এলাকার বড় ভাই বিলাত।
লতিফ মামু একদিকে যেমনি ছিলেন নিতুর ডাক্তার অন্যদিকে ছিলেন শান্তি কমিটির নেতা। নিতুর বাবা ওবায়েদ ও বাড়ীর কেউ তাকে পছন্দ করতেন না। আর বিলাত মিলিটারিদের সহযোগী হিসাবে কাজ করতেন। বিলাত মেজর ইশতিয়াককে মিতুদের বাড়ীতে নিয়ে আসে এবং মেজর ইশতিয়াক মিতুকে পছন্দ করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মিতু সে প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় এবং বিয়ের আয়োজন করে বিয়ের রাতেই বিভিন্ন রঙ্গরস আর ভালোবাসার অভিনয় করে সে মেজর ইশতিয়াককে গুলি করে মেরে ফেলে।
নিতুর বাবা নাটকের শুরুর দিকেই মুক্তিযুদ্ধে যায়। গোটা নাটকের শেষের দিকে তিনি ফিরে আসেন। আশু (মিতাই) ও মুক্তিযুদ্ধে চলে যায় কিন্তু মায়ের সাথে দেখা করতে এসে বিলাতের দেয়া খবরে মিলিটারিরা তাকে ঘিরে ধরে মায়ের সামনেই মেরে ফেলে। নাটকের শেষের দিকে নিতু বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু যুদ্ধের কারনে ডাক্তারের অভাবে তার সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হয়না।
১৬ ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়ে যায়। চারিদিকে যখন উল্লাস আর আনন্দের ঘনঘটায় ঠিক সেদিনই নিতু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- মহিমান্বিতা সাজ, অনুপ্রিয়া, দিলু মজুমদার, সাব্বির আহমেদ, রাজ সাগর, আরজুমান্দ আরা বকুল, শামীম হোসেন, আনোয়ার সাই, ম. ছালাম ও সামস্ আরেফিন।