শুক্রবার, এপ্রিল ১৯Dedicate To Right News
Shadow

বুসানে ‘কিম জি সুক অ্যাওয়ার্ড’ এর জন্য মনোনীত ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’

Spread the love

২৬তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘কিম জি সুক অ্যাওয়ার্ড’ এর জন্য মনোনীত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দাপুটে সাত নির্মাতার সাতটি চলচ্চিত্র। তারমধ্যে আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর তারকাবহুল প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’।

৬ সেপ্টেম্বর সোমবার ‘কিম জি সুক অ্যাওয়ার্ড’ এর জন্য মনোনীত সাতটি সিনেমার নাম ঘোষণা করে উৎসব কর্তৃপক্ষ। ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ ছাড়াও এই পুরস্কারের জন্য লড়বে ফিলিপিন্সের বিখ্যাত পরিচালক ব্রিলান্ডে মেন্ডোজা, জাপানী পরিচালক নাওমি ওগিগামি এবং ভারতের অপর্ণা সেনের ‘দ্য রেপিস্ট’।

বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের সাবেক পরিচালক কিম জি সুক, ২০১৭ সালে তার মৃত্যুর পর সম্মান জানিয়ে তার নামেই এই পুরস্কার দেয়া শুরু করে উৎসব কর্তৃপক্ষ। চতুর্থবারের মতো দেয়া হচ্ছে এই পুরস্কার। বিজয়ী সিনেমাটিকে অর্থমূল্য হিসেবে দেয়া হবে ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

‘কিম জি সুক অ্যাওয়ার্ড’ এর জন্য মনোনীত হওয়ার দিনে ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ এর কেন্দ্রীয় চরিত্র নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর ফার্স্ট লুক প্রকাশ করেছেন নির্মাতা। যা প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সাড়া পড়ে বেশ।

সিনেমাটি নিয়ে ফারুকী তার নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘নির্মাতা হিসেবে নিজের ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতিকে সিনেমায় ব্যাখ্যা করেছি! যা মানসিক আঘাত আমার পৃথিবী নিয়ে ভাবনার এবং দেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমার জন্ম হয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চল নোয়াখালিতে। এই এলাকার মানুষদের নিয়ে বহু বছর ধরেই ট্রল করা হয়। তাই, খুব কম বয়সেই আমি বুঝে গেছি, এই ট্রলের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে! কোন এলাকা থেকে এসেছি তা নিয়ে মিথ্যা বলা শুরু করলাম। আমার স্কুলের কোনো বন্ধুকে বাড়িতে আনতাম না, তারা যেন আমার বাবা মায়ের আঞ্চলিক ভাষা শুনে আমার এলাকা সম্পর্কে ধারণা করতে না পারে। বড় হতে হতে বুঝতে পেরেছি এটা মনের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে, কীভাবে আমাদের হৃদয়ে একটি শূন্যস্থান তৈরি করে দেয় যখন আমরা নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারি না, নিজেকে গ্রহণ করতে পারিনা, নিজের পরিচয় নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারি না। এই বিষয়টি আমার কাজে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ছোটবেলার এই অস্তিত্বহীনতার ব্যথা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ -এর কেন্দ্রীয় চরিত্র অনুভব করে।’

বর্তমানে সিনেমাটির পোস্ট-প্রোডাকশনের শেষ সময়ের কাজ নিয়ে কলকাতা ও চেন্নাইয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন নির্মাতা ফারুকী।

‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ এর শুরু থেকেই একের পর এক চমক দিয়েছেন নির্মাতা। সর্বশেষ চমক দিয়েছেন, ভারতীয় সংগীত পরিচালক এ আর রহমানকে যুক্ত করে। যিনি এই সিনেমার সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি সহপ্রযোজক হিসেবেও যুক্ত হয়েছেন। মূল চরিত্রে বলিউডের মেধাবী অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আছেন তাহসান, অস্ট্রেলিয়া থেকে মেগান মিশেল, ভারত থেকে ঈশা চোপড়া, বিক্রম কোচার এবং কিরণ খোজে।

এই চলচ্চিত্রে প্রযোজক হিসেব যুক্ত আছেন ফারুকীর প্রথম সিনেমা ‘ব্যাচেলর’ এর প্রযোজক ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। এর আগে এ বিষয়ে ফারুকী একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নির্মাণের শুরু থেকেই ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজক হিসেবে আমার পাশে ছিলেন। সবসময় সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি আমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘ব্যাচেলর’সহ মেড ইন বাংলাদেশ, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার ও পিঁপড়াবিদ্যাতেও প্রযোজক হিসেবে ছিলেন তিনি। আমার প্রথম আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে তাঁকে পাশে পাওয়া নিশ্চয় আনন্দের।
‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ প্রযোজক হিসেবে আরো যুক্ত আছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী, স্কয়ার গ্রুপের অঞ্জন চৌধুরী, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও আমেরিকান প্রযোজক শ্রীহরি সাঠে। কো-প্রডিউসার হিসেবে আছে বঙ্গবিডি।

‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এর চিত্রনাট্য একাধিক ফেস্টিভ্যালে ফান্ড জিতে নিয়েছে। এটি ২০১৪ সালে বুসান ফিল্ম ফেস্টিভালে এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে নির্বাচিত হয়। একই বছর নভেম্বরে ভারতের এনএফডিসি আয়োজিত ফিল্ম বাজারে শ্রেষ্ঠ প্রজেক্টের পুরস্কার লাভ করে এবং ডিসেম্বরে মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকা এবং এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড-এর যৌথ উদ্যোগে দেয়া অ্যাপসা ফিল্ম ফান্ড লাভ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *