
আজ ১৭ মার্চ সঙ্গীতের বিশুদ্ধ সাধক নীলোৎপল সাধ্য’র ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২০ সালের এই দিনে তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন।
নীলোৎপল সাধ্য ১৯৫৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ খৃস্টাব্দে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে কাকা সুনীল সাধ্য’র কাছে তাঁর সঙ্গীতে হাতে খড়ি হয়। পিতা জ্ঞানেন্দ্রনাথ সাধ্য একজন তবলা বাদক ছিলেন। পিতার কাছে তিনি তবলা বাদনে প্রাথমিক পাঠ নিয়েছিলেন। ১৯৬০-৬৫ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠকালীন সময়ে প্রথম একটি জারী গানের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন। সেই থেকে সঙ্গীতের সাথে তাঁর পথ চলা।
১৯৮১ সালে জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সন্মিলন পরিষদ ময়মনসিংহ শাখার প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সঙ্গীতে পরোপুরি আত্মপ্রকাশ ঘটে। সেই সুবাদে পরিচয় হয় সঙ্গীতগুরু ওয়াহিদুল হকের সাথে। লাভ করেন তাঁর শিষ্যত্ব এবং পরবর্তীকালে তাঁর সহচর হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে সঙ্গীতের তালিম দেন, সৃষ্টি করেন অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী। ১৯৮১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শুধু রবীন্দ্র চর্চায় প্রায় ১২০০ কর্মশালা সম্পন্ন করেছেন। বেশ কিছু দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষকতা করেছেন ছায়ানটেও।
উল্লেখ্য, সঙ্গীত গুরু ওয়াহিদুল হকের প্রতিষ্ঠিত ’আনন্দধ্বনি’র সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক হিসেবে ও নিযুক্ত ছিলেন নীলোৎপল সাধ্য। একাধারে রবীন্দ্র সঙ্গীত, দ্বিজেন্দ্র গীতি, অতুল প্রসাদ, ভজন, কীর্তনসহ বিভিন্ন আঙ্গিকের গানে ছিল তাঁর অসাধারণ দক্ষতা। সঙ্গীত জগতে তাঁর নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা তাঁকে এনে দিয়েছে একজন পূর্নাঙ্গ শিল্পীর মর্যাদা, তিনি পৌঁছে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সন্মিলন পরিষদ ২০২২ সালে এর ৪০ তম সন্মেলনে নীলোৎপল সাধ্যকে প্রদান করেছে সন্মাননা। টি এন্ড টি বোর্ডে চাকুরী করতেন নীলোৎপল সাধ্য। ২০১৬ সালে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে তার পায়ে ক্যান্সার ধরা পড়ে। দীর্ঘ তিন বছরের ও বেশী সময় মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ নীলোৎপল সাধ্য পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন।