
‘বর্ষ আসুক বর্ষ যাক, থিয়েটার চিরসাথী থাক’- স্লোগানে বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে মঙ্গল নাট্যাভিনয়ে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘চিত্রাঙ্গদা’-র দু’টি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১লা বৈশাখ ১৪৩২ অর্থাৎ ১৪ই এপ্রিল ২০২৫ সোমবার বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে এ প্রদর্শনী দু’টি অনুষ্ঠিত হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি কাব্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’-র গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন।
রবীন্দ্রনাথ মহাভারতের চিত্রাঙ্গদা-উপাখ্যান অবলম্বনে ১৮৯২-এ কাব্যনাট্যরপে এবং ১৯৩৬-এ নৃত্যনাট্যরূপে ‘চিত্রাঙ্গদা’ রচনা করেন। স্বপ্নদলের ‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রযোজনাটি নির্মিত হয়েছে কাব্যনাট্য পা-ুলিপি অবলম্বনে। এর নাট্যকাহিনিতে উপস্থাপিত হয়Ñ মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর-রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা, অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। এবারে অর্জুন যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকেÑ অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? এভাবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ পৌরাণিক কাহিনির আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়।
‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রযোজনার গ্রন্থিকরা হলেন- সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, অর্ক, জেবু, সুমাইয়া, সামাদ, নিসর্গ, আলী, বিপুল, হাসান, সুকুমার, বিমল, শফিক, জাওয়াদ, অনিন্দ্য প্রমুখ। প্রযোজনাটির মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা করেছেন ফজলে রাব্বি সুকর্ন।
প্রসঙ্গত, ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি)-র আমন্ত্রণে পৃথিবীখ্যাত ‘২৩তম ভারত রঙ্গ মহোৎসব, ২০২৪’-এ দু’টি প্রদর্শনীসহ দেশ-বিদেশে ‘চিত্রাঙ্গদা’-ও নিয়মিত মঞ্চায়ন করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে স্বপ্নদল। এবার ১লা বৈশাখ মঙ্গল নাট্যাভিনয়ে প্রযোজনাটির ১১৬ ও ১১৭তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।