সোমবার, ডিসেম্বর ২Dedicate To Right News
Shadow

তামাক আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সাংসদদের সুপারিশ

Spread the love

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন, তামাকপণ্যের মূল্য ও কর বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’- এর প্রতিনিধিবৃন্দ। মঙ্গলবার ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ইং তারিখে; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতকালে ফোরামের পক্ষ থেকে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।

তামাকের ক্ষয়ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছর পার্লামেন্টারি ফোরামের উদ্যোগে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট তামাক আইন সংশোধন করার দাবি জানিয়ে ১৫২ সাংসদের স্বাক্ষরিত চিঠি দেওয়া হয়। এছাড়াও গত বাজেটে তামাকের মূল্য কর বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেন ৫২ জন সংসদ সদস্য।

সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) জনাব কাজী জেবুন্নেছা বেগম ও সমন্বয়ক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব হোসেন আলী খোন্দকারের সাথে সাক্ষাত করে কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন ফোরামের প্রতিনিধিবৃন্দ। এছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের নিকট এ বিষয়ক চিঠি প্রদান করেন।

এসময় কর্মকর্তাবৃন্দ জানান, সংসদ সদস্যবৃন্দের সুপারিশকৃত দাবিসমূহকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের কাজটি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কর বৃদ্ধিতে আগামী বাজেটকে কেন্দ্র করে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শসমূহ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।

প্রতি বছর তামাকঘটিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশের ৩৫.৩% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭% অসংক্রামক রোগের কারণে হয়ে থাকে, যার জন্য মূলত দায়ী তামাক। এছাড়াও ধূমপান না করেও বছরে ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসাবাবদ দেশে প্রত্যক্ষ ব্যয় হয় ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সেই ধারাবাহিকতায়, বিদ্যমান তামাক আইন সংশোধন করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আলোকে ৬টি প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবনাগুলো হলো, ১. ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; ২. তামাকজাত পণ্য বিক্রয়স্থলে দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করতে হবে; ৩. তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে; ৪. খুচরা সিগারেট বা বিড়ি বিক্রি বন্ধ করতে হবে; ৫. ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস (এইচটিপি)-এর মতো ক্রমশ বিস্তার লাভ করা পণ্যসমূহের আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ৬. সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।

উল্লেখ্য, জাতীয় উন্নয়ন সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন; পার্লামেন্টারি ফোরামের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে। বৈঠককালে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *