ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রাথমিক স্তর থেকে সকলকে প্রোগ্রামিং এ যুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে নারীদের জন্য কাজের পরিবেশ তৈরি করে দেবার পাশাপাশি তাদের কর্মজীবনের নিরাপত্তাও দিতে হবে। কেবল ভবিষ্যত পেশার জন্যই নয় বরং চিন্তার জগতটাকে চমৎকারভাবে বিকশিত করার জন্য প্রোগ্রামিং ধারণা অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে মিশ্র পদ্ধতির শিক্ষা কার্যক্রম উদ্যোগের আওতায় প্রাথমিক স্তর থেকে কোডিং যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে একটি সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মন্ত্রী প্রোগ্রামিংয়ের আন্দোলনে জেলা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিডিওএসএন আয়োজিত ডিজিটাল প্রযুক্তিখাতে মেয়েদের অন্তর্ভূক্তিকরণ- বিডি গার্লস প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক মুনীর হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি নাজমা আশরাফ এবং ওমেন ইন ডিজিটালের নির্বাহী আছিয়া নীলা প্রমূখ মতবিনিময় করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ অসাধারণ ও ফলাফলেও মাইলফলক উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতার বড় অর্জন আমরা আমাদের মেয়েদের শিক্ষায় সম্পৃক্ত করতে পেরেছি। মেয়েদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ দিতে পারলে তাদের দ্ধারা অসম্ভব সৃজনশীল কাজ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার। সমাজের মূলস্রোতধারায় নারীর অংশীদারিত্ব ও নারী শিক্ষা সম্প্রসারণসহ নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগীতা আয়োজনে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, শিশুরা অসাধারণ দক্ষতার সাথে প্রোগ্রামিং করেছে। সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে মেয়েদেরকে জাতীয় অগ্রগতিতে চমৎকার মানব সম্পদ হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব বলে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বিডিওএসএন-এর প্রোগ্রামিং উদ্যোগটিকে একটি অসাধারণ উদ্যোগ আখ্যায়িত করে বলেন, মেয়েদেরকে একসাথে পারিবারিক কাজকর্মের চাপ সামলানোর পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হয়। পশ্চাদপদ ধ্যান-ধারনার কারণে অনেক মেয়েকে পেশার প্রতি নিরুৎসাহিত করা হয়। এ ধরণের নানা বাধার দেওয়াল ভেংগে নারীকে মূলস্রোত ধারায় সম্পৃক্ত করতে পারলে অনেক সুফল পাওয়া সম্ভব বলে উল্লেখ করেন শিক্ষায় ডিজিটার রূপান্তরের এই স্বপ্নদ্রষ্টা।
অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী তাদেরকে পেছনে রেখে জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। তিনি ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতে মানব সম্পদের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে মেয়েদেরকে এখাতে এগিয়ে আনতে বিদ্যমান বাধা গুলো অপসারণ করতে পারলে দেশ অনেক বেশি উপকৃত হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রোগ্রামিং একটি সৃজনশীল কাজ এবং এটি বিনোদন মূলকও। এই ক্ষেত্রে যথাযথ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
ওমেন ইন ডিজিটাল এর আছিয়া নীলা জানান যেয করোনার পরে তার প্রতিষ্ঠানেই মেয়েদের অংশগ্রহণ অর্ধেকে নেমে এসছে। নানা পারিবারিক সমস্যার জন্য এই ঘটনা ঘটছে বলে তিনি জানান। তিনি মেয়েদর সামনে থেকে এসব বাধা দূর করার আহ্বান জানান।