- পংকজ ফ্রান্সিস, জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শফি মোহাম্মদ তারেক বলেছেন, ঐতিহাসিক যুগে ছিল তাম্র-লোহার যুগ। আর এখনকার যুগ প্লাস্টিকের যুগ। প্লাস্টিক আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। কিন্তু এর সঠিক ব্যাবস্থাপনা না করা আমাদের জন্য হুমকির।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে জাবি সায়েন্স ক্লাবের আয়োজনে ‘পরিবেশে মাইক্রো প্লাস্টিকের দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুকি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহারে আমাদের সমস্যা নেই, কিন্তু সমস্যা হলো আমরা প্লাস্টিকের সঠিক ব্যাবস্থাপনা করি না।আমরা যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ফেলি।
তিনি বলেন, পরিবেশে অনেক রকমের প্লাস্টিক পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা মানবশরীরে খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে। তিনটি জিনিস থেকে মানুষের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করতে পারে। সেগুলো হলো- লবণ, পানি ও মাছ। আমরা বিভিন্ন জায়গার ১৩টি লবণের স্যাম্পল ল্যাবে পরীক্ষা করে মাইক্রোপ্লাস্টিক পেয়েছি। খোলা লবণে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে। সেখানে প্রতি গ্রাম লবণে ৭ থেকে ৮ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল। লবণের এ প্লাস্টিক রান্নার সময় পর্যাপ্ত তাপেও নিঃশেষ হয় না। যা মানবদেহের জন্য হুমকিস্বরূপ। মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে মাছের পাকস্থলি ও পেশিতেও। যার মাধ্যমে মানবদেহে সরাসরি প্রবেশ করতে পারে এই ক্ষতিকর প্লাস্টিক। যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এছাড়া টি ব্যাগ ও চিনিতেও এ ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিত্য ব্যাবহার্য বডি লোশন ও টুথপেস্টের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয় মাইক্রোবেডস নামক ক্ষতিকারক মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা ব্যবহারের পরে পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে। পরিবেশের এ দূষণ ঠেকাতে এসব পণ্যে অতিরিক্ত মাত্রায় প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে এবং ব্যবহারের পর যত্র তত্র প্লাস্টিক না ফেলে এটার সঠিক ব্যাবস্থাপনা করতে হবে।
এর আগে, অনুষ্ঠানের শুরুতে জাবি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সায়েন্স ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসলিন জাহান মৌ ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার প্রমুখ।