ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি দেশের মানুষের জীবনধারা পাল্টে দিয়েছে। নারী উদ্যোক্তা তৈরিতেও এই প্রযুক্তি অভাবনীয় ভূমিকা রাখছে। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণার পর এর গভীরতা না বুঝে বিদ্রুপকারীরা ২০২২ সালে এসে বুঝতে পেরেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাকাটা, ঘরে বসে সরকারি সেবা পাওয়া, কোভিডকালে অচল জীবন যাত্রা সচল রাখা। তিনি বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন কেবল বিশ্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্তই নয়, এই কর্মসূচি ২০৪১ সালে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দারিদ্র ও বৈষম্যহীন উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিআইআইএসএস মিলনায়তনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ইউএন ইসকাপ ও বিআইআইএসএস আয়োজিত ডিজিটাল কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে সাপ্লাই চেইন শক্তিশালীকরণ বিষয়ক তিন দিনব্যাপি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো: হাফিজুর রহমান, বিআইআইএসএস‘র ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল এম এ সাদি, ইসকাপ‘র সাউথ এন্ড সাউথ ওয়েস্ট এশিয়ার উপ-পরিচালক ড. রাজেন এস রত্না, ইউএনআরসি প্রতিনিধি মিস সুবর্ণা, সাউথ এশিয়া উইমেন ডেভেলপমেন্ট ফোরামের বাংলাদেশ চেপ্টারের সভাপতি নাসরিন এফ আউয়াল এবং উইমেন ইন ই-কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি নাসিমা আক্তার বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল কমার্স সম্প্রসারণে ক্রস বর্ডার নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের ৫ম শিল্প বিপ্লবের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, লাখ লাখ নারী উদ্যোক্তা ডিজিটাল কমার্সে যুক্ত হয়েছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত তার ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতায় নারীরা তুলনামূলকভাবে অনেক ভাল করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সারা দুনিয়ায় কেবল একটি অনুকরণীয় কর্মসূচিই নয়, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব কর্মসূচি শুরু হয়েছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কর্মসূচি ধারণা প্রকাশের ৮ বছর আগে। এটিও একটি মাইলফলক ঘটনা। ডিজিটাল কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন আমাদের মেয়েরা উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ডিজিটাল সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মন্ত্রী ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরিতে মায়েদের ভূমিকা অপরিসীম উল্লেখ করে বলেন, মায়েরা তার সন্তানের ভবিষ্যত নির্মাতা। সন্তানকে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নিরুৎসাহিত না করার জন্য মায়েদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা ডিভাইস ব্যবহার করবে কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করবেন আপনারা। তিনি বলেন, একটি ছুরি দিয়ে মানুষ হত্যা করা যায় আবার জীবন রক্ষায়ও ছুরিটি ব্যবহার করা যায়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ডিজিটাল কমার্স সম্প্রসারণে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা আঞ্চলিক এই প্রশিক্ষণকে এই অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই ফলপ্রসূ অবদান রাখবে বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপ থেকে ১১০ জন নারী উদ্যোক্তা তিন দিনব্যাপি এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।