মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রাম (এমএসএস-ইসিপি) এর সহযোগিতায় নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার খগা খড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ২১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল সাইট টেষ্টিং প্রোগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে।
দুই ধাপে গত ৪-৫ জুন ও ১৭-২১ সেপ্টেম্বর সাতটি কেন্দ্রে মোট ১৮৯১ জন শিক্ষার্থীর বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে কয়েকেটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই সেবা প্রদান করা হয়।
উক্ত স্কুল সাইট টেষ্টিং প্রোগ্রামে একজন শিক্ষার্থীর চোখে ছানি শনাক্ত হয় এবং ৪ জন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইসিপির সহযোগী হাসপাতালে রেফার করা হয়। এছাড়াও ১০০ জন শিক্ষার্থীকে চশমা ও ১৮৩ জনকে ঔষধ প্রদান করা হয়।
চক্ষুসেবা প্রদানের পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচারনার অংশ হিসাবে ৮১টি প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন আই কেয়ার প্রোগ্রামের প্রতিনিধিরা। এসময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে লিফলেট ও পোষ্টার বিতরন করা হয়।
চক্ষুসেবা গ্রহন করে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে খগা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র রিসাদ বলেন, “ক্লাস চলাকালীন ব্লাক বোর্ডের লেখা বুঝতে আমার খুবই সমস্যা হতো। তারা আমাকে একটি চশমা দিয়েছে যার মাধ্যমে আমি এখন খুব সহজেই দূরের লেখা পড়তে পারি।”
আই কেয়ার প্রোগ্রামের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে উপস্থিত একজন অভিভাবক বলেন, “চোখ পরীক্ষার এতো আধুনিক যন্ত্রপাতি আমি কখনোই দেখিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে আমার মেয়ের চোখে সমস্যা শনাক্ত হয়েছে অথচ আমরা জানতামই না। আমার মেয়েকে তারা চশমা দিয়েছে এবং সাথে কিছু ঔষধও দিয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং তাদের এমন কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
‘দারিদ্র্যের কারণে কেউ আর অন্ধ থাকবে না’ এই প্রতয়ে মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রাম ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব দূরীকরণে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য হলো – সুবিধাবঞ্চিত মানুষের নিরাময়যোগ্য অন্ধত্ব বিনামূল্যে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা প্রদান, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, চক্ষু স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষাদান, সক্ষমতা ও চক্ষুসেবা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা।
এমএসএস-এর প্রেসিডেন্ট ফিরোজ এম হাসান বলেন, “চক্ষুসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে ইসিপি-এমএসএস দেশজুড়ে সংস্থার কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে যাতে সরাসরি তাঁদের কাছে চক্ষুসেবার আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেয়া যায়।”
প্রসঙ্গত, আই কেয়ার প্রোগ্রাম জুলাই ২০১৪ থেকে আগষ্ট ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৩৯৩টি চক্ষুশিবির গ্রামাঞ্চল, প্রত্যন্ত অঞ্চল, জেলা, উপজেলায় বাস্তবায়ন করেছে। মোট ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৮ জন রোগী এসব চক্ষুশিবির থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন।