শনিবার, এপ্রিল ২৭Dedicate To Right News
Shadow

স্মার্ট বাংলাদেশের রোল মডেল হবে ডিজিটাল সেন্টার: পলক

Spread the love

ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় প্রযুক্তি-নির্ভর নাগরিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার ১৩তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই। গ্রামীণ অর্থনীতির হাব হিসেবে ভূমিকা রাখা এই উদ্যোগের দীর্ঘ পথচলার বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ১১ নভেম্বর নাটোরের সিংড়া উপজেলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং সিংড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক মো: মামুনুর রশীদ ভূঞা, নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, পিপিএম; শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প এর উপপ্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) জনাব মোঃ মোখতার আহমেদ এবং বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সেবা ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম।

­­­­ডিজিটাল সেন্টারের বর্ষপূর্তি উদযাপনের দিনে সিংড়ায় বাংলাদেশ ভারত ডিজিটাল সেবা ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বিডিসেট সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং হার পাওয়ার প্রকল্পের প্রশিক্ষণের ওরিয়েন্টশন উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি।

দেশ ছাপিয়ে এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসা কুড়িয়েছে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের রোল মডেল হবে ডিজিটাল সেন্টার। এই মডেল শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত। বাংলাদেশের এই মডেল অনেক দেশই প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ফিলিপাইনের বাংসোমারো প্রদেশে আমাদের ডিজিটাল সেন্টারের আদলে ১০৫টি ওয়ান স্টপ সেন্টার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছি। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, ঘানা, কম্বোডিয়াতেও ক্রস বর্ডারের মাধ্যমে এই মডেল রেপ্লিকেট করতে কাজ চলমান আছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জন্ম নিবন্ধন-মৃত্যু নিবন্ধন থেকে শুরু করে, বিদ্যুতের বিল দেওয়া, বিদেশে যাওয়ার রেজিস্ট্রেশন করা, আর্থিক লেনদেন এই সকল কাজ করার জন্য যেখানে, উপজেলা বা জেলা সদরে যেতে হতো, শত শত টাকা খরচ করতে হতো, দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো, যেই কাজ করতে তিন মাস সময় লাগতো, রেকর্ড রুমে ঢুকে যে ধুলা যে ময়লা, যে কষ্ট এবং দালালদের যে দৌরাত্ম্য, দুর্নীতির আখড়া, সেইটাকে কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুলভ মূল্যে স্বল্প সময়ে দুর্নীতি মুক্ত উপায়ে মানুষের দোরগোরায় সেবাটা পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ডিজিটাল উদ্যোক্তা ভাই-বোনদের মেধা এবং শ্রমে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ তিন মাস সময়টাকে কমিয়ে তিন মিনিটে নামিয়ে এনেছেন। এটাই হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ।

দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ৯৩৯৭টি ডিজিটাল সেন্টারের ১৭ হাজার ৮০০’র অধিক নারী-পুরুষ উদ্যোক্তা ৩৮৫টিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি সেবা নাগরিককে সহজে, দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রতিমাসে ডিজিটাল সেন্টার থেকে ৭৫ লাখেরও বেশি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। উদ্যোক্তারা এ পর্যন্ত নাগরিকদের ৭৮ দশমিক ১৪ শতাংশ সময়, ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ব্যয় ও ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ যাতায়াত সাশ্রয় করেছেন।

গ্রামের কোণায় কোণায় প্রযুক্তিসেবা নিশ্চিতে এরই মধ্যে ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে ১ হাজার ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সেবা থেকে যেন কেউ পিছিয়ে না থাকে সে লক্ষ্যে ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করছি। শুধু তাই নয়, আগামী বছরের মধ্যে এখান থেকে ২০ লাখ তরুণকে স্মার্ট স্কিলস প্রদান ও কর্মসংস্থানের আওতায় নেব। এ ছাড়াও নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে স্মার্ট সিটিজেন তৈরির পাশাপাশি স্মার্ট গ্রাম বিনির্মাণে কাজ করব।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক মো: মামুনুর রশীদ ভূঞা বলেন, ডিজিটাল সেন্টার গ্রামীণ অর্থনীতির হাব হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। যারা প্রবাসে আছেন তাদের কথা বিবেচনায় রেখে এরই মধ্যে আমরা ২০২৪ সাল নাগাদ সারাদেশের সকল ডিজিটাল সেন্টারে একটি করে প্রবাসী হেল্প ডেস্ক স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। প্রবাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ ১০টি দেশে এক্সপ্যাট্রিয়েট ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করবো। সকল সেন্টার থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্মার্ট সেবা দেওয়া হবে। এসব সেবার সংখ্যা ৩৮৫ থেকে ৫০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিচ্ছি। ডিজিটাল সেন্টার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম হাতিয়ার।

নাটোর জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইসিটি বিভাগের হার পাওয়ার প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক নিলুফা ইয়াসমিন।

ডিজিটাল সেন্টারের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্বাচিত সেরা নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তাদের পুরস্কার দেওয়া হয়। জেলার সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে একজন করে নারী-পুরুষ উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়া সাতটি উপজেলা থেকে একজন করে সেরা উদ্যোক্তাকে (নারী/পুরুষ) পুরস্কৃত করা হয়।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ মাজেদুল ইসলাম, সিংড়া উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব শেখ মোঃ ওহিদুর রহমান, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মোঃ জান্নাতুল ফেরদৌস, ৮ নং শেরকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো: লুৎফল হাবিব রুবেল, ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট জনাব অশোক বিশ্বাস এবং ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মাসুম বিল্লাহসহ আইসিটি বিভাগ, এটুআই, নাটোর জেলা প্রশাসন, সিংড়া উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *