সরকারি-বেসরকারি সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা এবং নগরবাসীর সহযোগিতা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গু রোগ হতে সুরক্ষিত রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে ‘এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় মতবিনিময়’ সভায় ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এসব কথা বলেন।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা কারো ওপর দায়ভার চাপাতে চাই না। কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে দায়ী করতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই। ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গু রোগ হতে সুরক্ষিত রাখতে আমরা সকলের সহযোগিতা নিয়ে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে চাই।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ডেঙ্গু রোগীর সঠিক ও নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “ডেঙ্গু রোগীর সঠিক ও নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করা হলে আমরা মাঠ পর্যায়ে আরও ফলপ্রসূ ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে পারব। যেমন, গতবছর আমাদেরকে অনেক রোগীর তথ্য দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমরা যাচাই-বাছাই করে গতবছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৯ হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। এছাড়াও যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন আমাদেরকে শুধু তাদের তথ্য দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যারা হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন তাদের তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। তাদের তথ্যও অত্যন্ত জরুরি। কারণ যিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন। আবার যিনি ডেঙ্গু রোগী কিন্তু বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন, তার তথ্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
ঢাদসিক মেয়র এ সময় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাজউক প্রতিনিধির কাছে নির্মাণাধীন ভবনের তালিকা চেয়ে বলেন, “আপনাদের কাছে নির্মাণাধীন ভবনের তালিকা থাকে। রিহ্যাবের বাইরেও অনেক ভবন নির্মাণ করা হয়। সেজন্য আপনারা যদি সেসব নির্মাণাধীন ভবনের তালিকাটা আমাদের কাছে সরবরাহ করেন, তাহলে আমরা যৌথভাবে অভিযানগুলো পরিচালনা করতে পারব।
জবাবে রাজউক পরিচালক বলেন, রাজউক আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের তালিকা সরবরাহ করা হবে।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিকে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা গতবারের ন্যায় এবারও আমাদের আওতাধীন এলাকার বিদ্যালয় প্রাঙ্গন একবার পরিষ্কার করে দিবো। কিন্তু পরবর্তীতে যদি আপনারা সপ্তাহে একদিন শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করেন তাহলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও সহজ হবে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন সচেতনতা সৃষ্টি হবে তেমনি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনও নিরাপদ থাকবে।”
অনুষ্ঠানে রিহ্যাব প্রতিনিধি জানান যে, এখন থেকে করপোরেশনের অভিযানকালে রিহ্যাব থেকে প্রতিনিধি দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন মো. আলতাব হোসাইন, করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, বর্ডার গার্ড হাসপাতাল ঢাকার পরিচালক লে. কর্ণেল শফিউল আশরাফ রুবেল, রাজউক পরিচালক শামসুল হক, ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের পরিচালক মো. হাফিজ আহমেদ, বাংলাদেশ বেতারের উপ-পরিচালক মাহফুজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা ওয়াসা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর, রিহ্যাব, বাংলাদেশ রেলওয়ে, মাউশিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।