শনিবার, অক্টোবর ১২Dedicate To Right News
Shadow

ঘরে থাকা পণ্যের মেয়াদ আছে তো?

Spread the love

রেজাউর রহমান রিজভী

যে কোন প্রোডাক্ট কেনার সময় আমরা প্রায়শঃই সেটার মেয়াদ দেখে নেই। অথচ সেটা যদি দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করার মতো হয়, তবে পণ্যের মেয়াদ যে কবেই পার যায় সেটা অনেক সময়ই খেয়াল করি না। অথচ সব কিছুরই কিন্তু মেয়াদ আছে, হোক সেটা ঔষধ বা খাবার সামগ্রী। আসুন দেখা যাক ঘরে থাকা কি কি জিনিসের মেয়াদ দেখাটা জরুরী।

১. ঔষধ: অনেকেই বাসায় জ্বর, ঠান্ডা, মাথা ব্যথা, এসিডিটি সহ নানা রকমের অসুখের জন্য ঔষধ কিনে রাখেন। যাতে বিপদের সময় তাৎক্ষণিক ভাবে এগুলো হাতের কাছে পাওয়া যায়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া যে দেশে ঔষধ কেনাটা মামুলী বিষয়, সে দেশের ঘরে ঘরে ঔষধের এমন স্টক থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে সে সব ঔষধের মেয়াদ সব সময় আদৌ দেখে খাচ্ছেন কিনা সেটাও কিন্তু জরুরী। এছাড়া হাতের কাছে থাকা ফার্স্ট এইডের সামগ্রীগুলোরও মেয়াদ নিয়মিত চেক করুন। শরীরের কোথাও কেটে গেলে সাধারণ যে ব্যান্ডেড ব্যবহার করেন সেটারও কিন্তু মেয়াদ আছে। সেটাই কি আদৌ চেক করেন? মনে রাখবেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়া আর বিষ খাওয়া সমান কথা। এখন আপনিই ঠিক করেন ঔষধ খাবেন নাকি বিষ খাবেন!

২. খাবার সামগ্রী: মশলা জাতীয় পণ্যগুলো গৃহিণীরা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করেন। এছাড়া তাৎক্ষণিক ভাবে ঘরে আসা মেহমানের জন্য রাখেন সেমাই, বিস্কুট, কেক বা নুডলস। পচনশীল পণ্য হলে সেটা নষ্ট হয়ে গন্ধ ছড়াবে। কিন্তু যেটা পচনশীল না, অথচ মেয়াদ পার হয়ে গেছে সেটি কিভাবে টের পাবেন? তাই অভ্যাস করুন অবসর সময়ে বাসায় রাখা বিভিন্ন পণ্যের মেয়াদ চেক করে দেখতে।

৩. পানীয়: অধিকাংশ বোতল বা প্যাকেটজাত পানীয় ৩ থেকে ৬ মাসের বেশি মেয়াদ থাকে না। কিছু কিছু প্রোডাক্টের গায়ে অবশ্য এক বছরেরও মেয়াদ থাকে। এজন্য কেনার সময় সাম্প্রতিক সময়ের উৎপাদনের তারিখ দেখে কেনা ভালো। এছাড়া ফ্রিজে সফট ড্রিংকস রেখে রয়েসয়ে খাওয়া যাদের অভ্যাস, তারা অবশ্যই মেয়াদ দেখে খাবেন।

৪. প্রসাধন সামগ্রী: মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধন সামগ্রী (হোক সেটা রূপচর্চার সামগ্রী বা দাঁত মাজার পেস্ট) ব্যবহার করা অবশ্যই খুব ক্ষতিকর। যে সাবানটি গায়ে মাখেন সেটারও কিন্তু মেয়াদ লেখা থাকে। অনেক মেয়েই একবার কোন বিউটি প্রোডাক্ট কিনেছেন তো বছরের পর বছর সেটাই ব্যবহার করেন। এক শীতকালের লোশন আরেক শীতকালের জন্য রেখে দেন। এতে দোষের কিছু নেই। তবে ব্যবহারের আগে অবশ্যই মেয়াদ দেখে নেবেন। মনে রাখবেন আপনার ত্বকের বারোটা বাজাতে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনীই যথেষ্ট। শুধু তাই নয়, নানা রকমের ত্বকের রোগও এতে হয়। তাই খুব মায়া হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ লিপিস্টিক বা মেকাপবক্সটি ডাস্টবিনে ফেলে দিন। নইলে চিকিৎসার খরচে যা যাবে তাতে এরকম মেকাপবক্স কয়েক শত কিনতে পারবেন।

৫. অন‌্যান্য: বাথরুম বা রান্নাঘর ক্লিনিংয়ের প্রোডাক্টের গায়েও সেটার মেয়াদ থাকে। হয়তো ভাবলেন মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এসব প্রোডাক্ট ব্যবহারে তো আপনার প্রত্যক্ষ কোন ক্ষতি হচ্ছে না। এই ধারণা ভুল। মেয়াদোত্তীর্ণ যে কোন জিনিসই দীর্ঘমেয়াদে আপনার ও আপনার পরিবারে উপর এফেক্ট করবে। সুতরাং, যে প্রোডাক্টের মেয়াদ আছে, সেটি অবশ্যই ফলো করবেন। আর যেটিতে মেয়াদ লেখা নেই, অথচ আপনার কাছে মনে হচ্ছে সেটির মেয়াদ উল্লেখ করাটা জরুরী ছিল, সেটি ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের নজরে আনুন।

মনে রাখবেন, আপনি সতর্ক থাকলে আপনার পরিবারও নিশ্চিন্ত থাকবে।

© রেজাউর রহমান রিজভী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *