পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় দেশীয় ই কমার্স প্ল্যাটফর্ম Hill E-Commerce Society (HILLES) এখন ৩০ হাজার সদস্যের একটি প্রাঙ্গন।। এখনও বয়স তার পাঁচমাস হয়নি। এটা দেশব্যাপী বেশ আলোচনায় এসেছে।
এ বিষয়ে গ্রুপের এডমিন মনি পাহাড়ী বলোন- “হিল ই-কমার্স সোসাইটি” হিল এর দেশীয় কমন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এরচেয়ে সংখ্যায় বড় গ্রুপ রয়েছে। সেগুলো দেশী বিদেশী সকল প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছে এবং ভালো পারফর্ম করছে।
তবে দেশী প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার পেছনে আমাদের বেশকিছু যুক্তি রয়েছে। আমাদের দেশের অসাধারণ অনেক সৃষ্টি রয়েছে। সেগুলো বাইরের প্রোডাক্টের চাকচিক্যের ভিড়ে হারিয়ে যাক সেটা চাই না। আমাদের দেশের টাকা বাইরে না যেয়ে অন্য দেশের টাকা এদেশে আসবে সেটা স্বপ্ন ছিল। আশাব্যন্ঞ্জক বিষয় হচ্ছে এই কাজটি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।”
সংখ্যাগত দিক থেকে এতো অল্প সময়ে দেশী ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের কমন ই কমার্স গ্রুপ এর শীর্ষে চলে এসেছে “হিল ই-কমার্স সোসাইটি”। এই অর্জনের পেছনের কারণ সম্পর্কে মনি পাহাড়ী বলেন-
“আমাদের মূল উদ্দেশ্য পাহাড়ের অনবদ্য সৃষ্টগুলোকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করানো । সেখানে প্রোডাক্ট যেমন রয়েছে তেমনিভাবে এখানকার প্রকৃতি, জনজীবন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা নিয়েও কাজ করছি আমরা। এতে পাহাড়ের প্রতি দারুণ আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে সবার। পাহাড়ের পাশাপাশি সমতল এর ঐতিহ্যবাহী নানানকিছু রয়েছে এখানে। পাহাড়কে জানছে সমতল আর সমতলকে নিবিড়ভাবে দেখছে পাহাড়। পরস্পরের মধ্যে অদ্ভুত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্কটাই হিল ই কমার্স এর সবচেয়ে বড় শক্তি। আরও অনেক গ্রুপের সাথে যুক্ত আছেন উদ্যোক্তাবৃন্দ। কিন্তু দিনশেষে ঘরে ফেরার আনন্দ নিয়ে কাজ করেন তারা হিল এ। এখানে শুধু প্রোডাক্ট নিয়ে গল্প হয় না। আমাদের কাভার এ অধিকাংশ সময় জুড়ে থাকে পাহাড়ের প্রকৃতি ও জনজীবনের ছবি। এতে মানসিক প্রশান্তি পান ক্রেতা, উদ্যোক্তা, শুভাকাঙ্ক্ষী সকলে।
মাত্র পাঁচ মাসেই বেশ কয়েকজন লাখপতি সেলার বেরিয়েছেন হিল ই-কমার্স সোসাইটি থেকে। এটাও একটা বড় অর্জন। এর পেছনের কারণ এখানে ক্রেতা উদ্যোক্তা সমান মর্যাদায় অবস্থান করেন। লাখপতি সেলার যেমন রয়েছেন সেভাবে লাখপতি বায়ারও আছেন আমাদের।
আমরা কঠিন ভাষায় কথা না বলে সহজ যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মাঝে মাঝে বিনোদন এর আয়োজন করি। মাসপূর্তিতে গ্রুপ ডেভেলপ করা নিয়ে কথা বলি। কথার মাঝে গান হয়। গল্প হয় ফেসবুক লাইভে। ফলে আরও কাছের হয় সম্পর্কগুলো। এভাবে আমরা এক হয়ে যাই। ”
হিল ই-কমার্স সোসাইটিতে বেশকিছু টিম কাজ করছে। তারমধ্যে সিনিয়র মডারেটর হিসেবে রয়েছেন ননিকা চাকমা, মাফরুহা চৌধুরী, ভানতংকুং বম, মেহনাজ রহমান লিরা,রুমানা খানম, জান্নাত আরা ঝুনু, দীপ্তা দেওয়ান, বি. জামান রিপিট, সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, পিটম চাকমা। মডারেটর হিসেবে আছেন ইলোরা সুলতানা, এস এফ জ্যোতি, ঊর্মি গোস্বামী নীড়, নব কুমার, হুমায়রা ঐশী,শামীমা হক, লায়লা কামরুন নাহার, মোহাম্মদ মাজেদুল হক, আইশা চাকমা।
- পরিচালক হিসেবে রয়েছেন কামরুজ্জামান রঞ্জু, সফিক পাহাড়ী, রূদাবা রায়হান, মনিরুল হক, জুয়েল বড়ুয়া ইমন, রন্ত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, রেজাউর রহমান রিজভী, ইকবাল আহমেদ জনি, রিপন খান, ধ্রুব হাসান বিপ্লব সরকার,শম্পা হক, সোহানা পারভীন, আলমগির কবীর, ফারজানা ববি, রুবেল মিয়া, শিখা চাকমা, তাহসিন রহমান ও আশিক সুমন।
লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবে আছেন সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী হাবিব রাব্বানী উচ্ছ্বাস।
এর বাইরেও তরুন টিম কাজ করছে একটা। তাদের মধ্যে বেশ সক্রিয় ভূমিকা রাখছে সাফায়েত মজুমদার হিমেল, স্বপ্না চাকমা, মহিউদ্দিন সজীব, রুবিনা বেগম, আইশি চাকমা, লিলি, খুশি ডুং কেপি, নাহার মুন্নী, ঝুমুর, তাসনিয়া পাখি, উম্মে হাবিবা বৃষ্টি, কিশোর তঞ্চঙ্গ্যা আমু, সাদমান খান, সাদমান সাকিব, এলি চাকমা, আফরোজা সাদিয়া, কানিজ রুমকি, মোঃ সুমন সরকার, ইয়োংসাঙ্গি সীমা, তানিয়া সারোয়ার, টিপরা জ্যাক, মনীষা চাকমা, সুশান্ত চাকমা, মিনু খেয়াং।
এর বাইরেও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে হিল এ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিথযশা বেশ কয়েকজন মানুষ যুক্ত রয়েছেন এবং যুক্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পাহাড়ের প্রতি বিশেষ টান জাগিয়ে তোলায় বড় ভূমিকা রাখছে হিল ই-কমার্স সোসাইটি।
মনি পাহাড়ী বলেন – “আগামীতে হয়তো পার্বত্য চট্টগ্রামে আরও অনেক দেশী ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হবে। তারা সবদিক থেকে ছাপিয়ে যাবে আমাদের। সেইদিনের স্বপ্ন দেখি। আমরা চাই চলাটা হোক সুন্দর আর মিষ্টি সম্পর্কময়।”
পার্বত্য অঞ্চলের দেশী ই-কমার্স প্লাটফর্ম এর সম্ভাবনার জায়গাটা “হিল ই- কমার্স সোসাইটি” দেখিয়েছে। এই অর্জনের পাশাপাশি আরও বহু অর্জনের পালক যুক্ত হবে তাদের এমনটাই বিশ্বাস সকলের।