দাম্পত্য জীবনের ২৬ বছর পার করেছেন অভিনয় শিল্পী যুগল শফিউল আলম বাবু ও নাবিলা আলম পলিন। ১৯৯৬ সালের ২৮ আগস্ট ভালোবাসার মধ্য দিয়ে দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করেন তারা। পরিবার ও সমাজের অনেক রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সহায় সম্বলহীনভাবেই শুরু হয় দাম্পত্য জীবন। বিয়ের ১ বছরের মাথায় পুত্র সন্তান এবং ১০ বছরের মাথায় কন্যা সন্তান নিয়ে সুখময় জীবন অতিবাহিত করে আসছেন তারা। পরিবারের ৪ জনই অভিনয় শিল্পী। নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলাদেশের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে যে ৪/৫ টি অভিনয় শিল্পী পরিবার আছে তার মাঝে একটি এই পরিবার।
শফিউল আলম বাবু একাধারে উপস্থাপক, অভিনয় শিল্পী ও নাট্য পরিচালক। উপস্থাপনায় তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে বিটিভি’র স্বাস্থ্যতথ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে ১৯৯৯ সাল থেকে বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘সপ্তডিঙা’র মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পান, অর্থাৎ এটিই তার অন্যতম সাইনিং প্রোগ্রাম হিসেবে বিবেচিত। উপস্থাপনার পাশাপাশি চলতে থাকে নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয়।
নাবিলা আলম পলিন অভিনয় শিল্পী ও কবি। অভিনয় শিল্পে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৫ এ বাংলাদেশ বেতার এ কন্ঠ অভিনয় এর মাধ্যমে। ১৯৯৮ থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত শুরু হয় অভিনয়। অদ্যাবধি চলছে তাদের শিল্পচর্চা। ইতিমধ্যে উভয়েই টিভি নাটক, ফিল্ম, ওয়েব ফিল্ম, ওয়েব সিরিজ, টিভিসি, ওভিসি তে নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন।
পলিন বলেন, জীবন চলার পথে অনেক প্রতিকূল অবস্থা পেরিয়ে আসতে হয়েছে আমাদের। সৎ ভাবে চলতে গিয়ে এসেছে অনেক অর্থনৈতিক বিপর্যয়। জীবন চলার পথে এসেছে নানা প্রলোভন কিন্তু কোন কিছুই আমাদের প্রভাবিত করতে পারেনি। যখনই চরম শংকট এসেছে আল্লাহর কাছে শুধু প্রার্থনা করেছি। আমরা মনে প্রানে বিশ্বাস করি সকল সংকটের সমাধান একমাত্র সৃষ্টিকর্তার কাছে। এইজন্য অবশ্য হাতগুটিয়ে বসে থাকলে হবেনা স্ব-স্ব চেষ্টা ও সাধনা থাকতে হবে।
দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে বাবু বলেন, জীবন চলার পথে অনেক প্রতিকূল অবস্থা আসবে। ছোটখাট অনেক বিষয় নিয়ে খুনশুটি হবে। কিন্তু তাকে দীর্ঘ স্থায়ী করা ঠিক হবে না। আমাদের মাঝেও প্রচুর ঝগড়া হয়। কিন্তু রাগ বা অভিমানের সময়সীমা সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। আর আমরা কেউই এখনো রাগ করে বাপের বাড়ী বা কোথাও যাইনি। এই অতি আধুনিকতার যুগেও আমরা একঘরে, এক বিছানায় দিবস-রাত্রি যাপন করি। আমাদের ছেলে-মেয়ে এখন অনেক বড়। তারা আমাদের বচসা মেনে নেয় না আবার আমাদের ভালোবাসাকে ভীষন উপভোগ করে। তারা খুব খুশী যখন আমরা একে-অপরকে সময় দেই বা একে অপরকে খাইয়ে দেই। তারা কিছু বলেনা কিন্তু তাদের চোখের ভাষা বুঝি। আমাদের মাঝে এখনো অনেক বচসা হয়, তবু জীবনকে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলেছি।