জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধন দ্রুত পাশের ব্যবস্থা গ্রহণে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি ও সচিব ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে অনুরোধ জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ সংসদ সদস্যবৃন্দ। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ফোরামের প্রতিনিধিবৃন্দ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবের সাথে সাক্ষাতকালে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নয়ন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।
এসময় গত মে মাসে কক্সবাজারে ৪০ জন মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন’ শীর্ষক কনফারেন্সের ‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্র’, কনফারেন্সের সচিত্র প্রতিবেদন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট ১৫২ জন সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষরকৃত চিঠির অনুলিপি হস্তান্তর করা হয়।
সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে উন্মুক্ত স্থানে (পাবলিক প্লেস) ধূমপান তথা ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি ও প্রস্তুত বন্ধ করা, তামাকজাত পণ্যের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার বাড়ানো, সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) নামে তামাক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা এবং বিক্রির স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন বন্ধ করা; ইত্যাদি বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তামাক দ্রব্য ব্যবহারে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ, যার মধ্যে ৬১ হাজারই শিশু। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ তামাক। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের নানান কর্মসূচি, সংসদ সদস্যবৃন্দের উদ্যোগ ও তামাক-বিরোধী সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে যুক্তিযুক্ত করার পথে রয়েছে, যার খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পর্যায়ে আইনটি মন্ত্রিপরিষদ ও জাতীয় সংসদে উত্থাপনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করার বিষয়ে কাজ করছে সকল পক্ষ।
উল্লেখ্য, ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ দেশের সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধসহ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী পরামর্শ, উদ্যোগ এবং ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ফোরামটি জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের বিষয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন সংস্থা, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন’ পার্লামেন্টারি ফোরামের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে।