রবিবার, মে ১৯Dedicate To Right News
Shadow

চলচ্চিত্রে চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম

Spread the love

১৯৪৩ সালে চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া মনিরুল পড়াশোনা করেছেন ঢাকার তৎকালীন আর্ট কলেজে। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু । এরই তিন বছর বাদে বৃত্তি নিয়ে স্পেনে পাড়ি জমান, এরপর থেকে সেখানেই বসবাস। সময় করে বছরের কয়েকটি মাস থাকেন বাংলাদেশেও।
এবার আশিক মোস্তফা পরিচালিত চলচ্চিত্রে উঠে এল চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামের বর্ণিল জীবন। সাত বছর সময় নিয়ে গুনি এ প্রবাসী চিত্রশিল্পীর ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র‘মনির: এ পোট্রেট অব এন আর্টিস্ট’ এরপ্রযোজক চলচ্চিত্রকার রুবাইয়াত হোসেন। শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে হয়ে গেলো ছবিটির প্রদর্শনী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কথা বলেন শিল্পী মনিরুল ইসলামের শিক্ষক ও বরেণ্যশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। তিনি বলেন, ওয়াটার কালার হল কবিতার মতো। অল্প কথায় অনেক কথা বলে দিতে হয়। বেশি কারিগরি চলবে না, বেশি পাণ্ডিত্য চলবে না।মনির সেটি দারুণ আয়ত্ব করে নিয়েছে। স্পেনে এখন সে অনেক বড় শিল্পী। সেখানে সাংঘাতিক রকমের ওর কদর। আমার খুব ভালো লেগেছে ওর সাফল্য।
নির্মাতা ও প্রযোজকধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানে শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, ওরা দুজন না থাকলে এই সিনেমাটি হত না। ওরা অনেক পরিশ্রম করে সিনেমাটি বানিয়েছে।
মুস্তাফা মনোয়ার ছাড়াও প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, শিল্পী রফিকুন নবী, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, ঢালী আল মামুনসহ আরো অনেকে।
ঢাকা, স্পেন ও শিল্পীর পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুরে দৃশ্যধারণ হয়েছে। এতে মনিরুলইসলামের শিল্পী জীবনের নানা কথা উঠে এসেছে। দেখা যাবে তার সাদামাটা জীবনের নানা দিক। ছবিটি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই বললেন চলচ্চিত্রটির পরিচালক আশিক মোস্তফা। তিনি বলেন ছবিটি করতে গিয়ে আমাদের দারুণ সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। একজন বড় শিল্পীকে দেখেছি ভীষণ সাধারণভাবে। তিনি বলেন রান্না করা, বাজার করার মতো ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রসঙ্গের পাশাপাশি শিল্পী জীবনের তাত্ত্বিক অনেক আলাপও করেছেন খ্যাতিমান এই শিল্পী।
প্রায় দুই দশক ধরে উনি বইয়ের মধ্যে ছবি আঁকেন, যেগুলো বিক্রি করবেন না বা বিক্রির জন্য নয়। সেই ছবিগুলোর প্রদর্শনীও করেন না তিনি। এটা অনুসন্ধান করতে গিয়েই উনাকে নিয়ে সিনেমাটি করতে আগ্রহ থেকেই মনিরুল ইসলামকে নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ বলে জানালেন আশিক মোস্তফা।
প্রযোজক রুবাইয়াত হোসেন বলেন, এই সিনেমা করতে গিয়ে আমরা শিল্পী মনিরুল ইসলামকে খুব কাছ থেকে দেখতে পেরেছি। একজন শিল্পী এবং ব্যক্তি মনিরুল ইসলাম দারুণ একজন মানুষ।আমাদের পরিকল্পনা আছে- চলচ্চিত্রটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শন করব। আমরা অনেক মানুষকে সিনেমাটি দেখাতে চাই।
স্পেন, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মনিরুল ইসলামের একক ও যৌথ চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।স্পেনের সম্মানসূচক ‘রয়েল স্প্যানিশ অর্ডার অব মেরিট’ পুরস্কার অর্জন করেছেন চিত্রশিল্পী মনিরুলইসলাম। ১৯৯৭ সালে তিনি স্পেনের রাষ্ট্রীয় পদক, ২০১০ সালে স্পেনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা দ্য ক্রস অব দ্য অফিসার অব দ্য অর্ডার অব কুইন ইসাবেলা পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে একুশে পদক ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *